চলতি ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যর্থতার দায় নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে পদত্যাগের অনুরোধ জানিয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এক মাসের মধ্যে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খোন্দকার হাসান শাহরিয়ার রোববার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে তাদেরকে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। নোটিশটি পাপন, সাকিব ছাড়াও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরীকেও পাঠানো হয়েছে।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের চলমান আসরে বাংলাদেশ দলের প্রাপ্তি একেবারেই তলানিতে। ৯ ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে মাত্র দুটিতে। হারের মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে টাইগারদের এবারের বিশ্বকাপ মিশন। রোববার সকাল ১০টায় ভারত থেকে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের এমন টানা হার নিয়ে দেশজুড়ে চলছে তীব্র সমালোচনা। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।
এমনই অবস্থায় এমন নোটিশ পাঠানো হলো। তাতে বলা হয়েছে, এই নোটিশপ্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে ক্রিকেট টিমের সম্পূর্ণ কোচিং স্টাফ ও নির্বাচক কমিটি বাতিল করতে হবে। একইসঙ্গে আইসিসি পুরুষ বিশ্বকাপ ক্রিকেট-২০২৩ এ ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
পাশাপাশি উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে নিজস্ব কোচ তৈরি, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলো যে ধরনের উইকেটে হয় তার অন্তত কাছাকাছি মানের উইকেটে ঘরোয়া লিগ আয়োজন, স্কুল ও বয়সভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও প্রশিক্ষণের আয়োজনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে নোটিশে।
বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতার দায়ভার কাঁধে নিয়ে পুরো জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বে এমন কোনো ক্রিকেট বোর্ড সম্ভবত খুঁজে পাওয়া যাবে না, যারা সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপ দল গড়েছিল তাদেরই দেশসেরা ওপেনারকে দলের বাইরে রেখে। যে ওপেনারকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেকে নিয়ে অবসর থেকে খেলায় ফিরিয়েছিলেন।
বিশ্বকাপ শুরুর দুই মাস আগে নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল দলের দায়িত্ব ছাড়েন। সেই ঘটনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দলের বৃহত্তর স্বার্থে বিশ্বকাপের কথা চিন্তা করে সময়োপযোগী কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
আবার ওপেনার লিটন দাসও ব্যক্তিগত কারণে (পুত্রসন্তানের জন্ম) দুইবার খেলা চলাকালীন দেশে এসেছেন। পেশাদার দলে মানবিক কারণে একবার আসা মেনে নেয়া যায়। তাই বলে একাধিকবার! ম্যাচ গুরুত্বহীন হলেও পেশাদার টিমে এমনটা চলতে পারে না। ম্যানেজমেন্টের এমন শিথিল মানসিকতা চূড়ান্ত পেশাদার সময়ে আরও বেমানান। অথচ এ ক্ষেত্রেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বোর্ড।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জে খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম ৬ বছর ধরে পানির নিচে পড়ে আছে। সেটি মেরামতে ক্রিকেট বোর্ড কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এসব কারণে বোর্ডের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দায়ভার গ্রহণ করে পদত্যাগ করার দাবি জানানো হয়েছে এই আইনি নোটিশে।