আন্তর্জাতিকতথ্যপ্রযুক্তিবিশেষ সংবাদসর্বশেষ

জাঁকজমকপূর্ণ দুবাই এয়ারশো শুরু হয়েছে

Pickynews24

সর্বশেষ প্রযুক্তি এবং সেই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সমন্বয়ে নান্দনিক নকশার বিমান, হেলিকপ্টার, ড্রোন, আকাশট্যাক্সি, উড়ুক্কু স্কুটারের এমন সমাবেশে পারস্য উপসাগরের দক্ষিণ উপকূলের নগর দুবাই এখন বিশ্ব এভিয়েশনের প্রাণকেন্দ্র।দুবাই ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রালের সুবিশাল চত্বরে বসেছে সব ধরনের সামরিক ও বেসামরিক আকাশযানের অন্যতম বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ এই প্রদর্শনী।গতকাল থেকে শুরু হয়েছে জাঁকজমকপূর্ণ দুবাই এয়ার শো। ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে হবে বিশ্বের অন্যতম বড় এই প্রদর্শনীর ১৮তম আসর।

আকাশ, মহাকাশবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এমন মহা আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছেন। নিবন্ধনের জন্য অনলাইনের বিকল্প কোনো ‘লাইন’ ছিল না। ১৬ বছরের নিচে কারও এখানে প্রবেশের সুযোগ নেই। এ ছাড়া আছে ড্রেস কোড মেনে চলার বাধ্যবাধকতা। মোটকথা এমন বিশাল আয়োজন সবার জন্য উন্মুক্ত নয়। তবে মাথার ওপরে বিশাল আকাশ যেহেতু সবার জন্য উন্মুক্ত, সে কারণেই সব থেকে উপভোগ্য এয়ার ডিসপ্লে বা নানাবিধ আকাশযানের মনোজ্ঞ মহড়া, চিত্তাকর্ষক অ্যারোবেটিক সাধারণের জন্য উন্মুক্ত।

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, পৃথিবীর প্রায় ৯৫টি দেশ থেকে বিমানশিল্পের সঙ্গে জড়িত ১ হাজার ৪০০টির বেশি প্রতিষ্ঠান অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে ঠাসা তাদের পণ্যসম্ভার প্রদর্শনের জন্য হাজির হয়েছে জৌলুশের নগর দুবাইয়ে। উপস্থিত রয়েছে উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক ৩৯০টি প্রতিনিধিদল। রয়েছে প্রায় ২০০ আকাশ ও মহাকাশযান। অংশ নিয়েছে মোট ৯টি বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। ৮০টির বেশি স্টার্টআপের উজ্জ্বল উপস্থিতি এয়ার শোর আরেকটি আকর্ষণ। আছেন ৩০০ বিশেষজ্ঞ বক্তা, যাঁদের ঝুলিতে আছে বিস্ময়কর প্রযুক্তি আর উদ্ভাবনের চমকপ্রদ গল্প।

এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং বিমান বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা বাদ পড়ছে না। ইতিমধ্যে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন যে বর্তমানে ২৩ হাজারের বেশি আকাশযান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আকাশ। আগামী দুই দশকে তা হবে প্রায় দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৪৫ হাজার। পরিবেশবান্ধব, সময় এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী আকাশযান উদ্ভাবনের অগ্রগতি, প্রতিবন্ধকতা আর সম্ভাবনার কথা বলছেন তাঁরা। জ্বালানি হিসেবে ঘুরেফিরে তরল হাইড্রোজেনের কথা উচ্চারিত হচ্ছে।

এয়ার শোর আলোচনা করলে ইউরোপিয়ানদের এয়ারবাস এবং আমেরিকানদের বোয়িং—এই দুটি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অতিকায় বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই।

দুবাই এয়ার শো ২০২৩-এ চমক দিচ্ছে বোয়িং নির্মিত সুবিশাল বিমান ৭৭৭এক্স। দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট বিমানটির যাত্রী বহন ক্ষমতা ৪২৬ জন। প্রায় ৭৭ মিটার বা ২৫২ ফুট দীর্ঘ বিমানটির দুই পাশের পাখা ৭২ মিটার বা ২৩৫ ফুট বিস্তৃত। ফলে বহু বিমানবন্দরে এমন বিস্তৃত ডানা নিয়ে বিপাকে পড়তে পারে, এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভাঁজ করা যায় এমন ডানা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সাল থেকে বিমানটির বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হবে।

অন্যদিকে এয়ারবাস তাদের এ৩৫০-১০০০ বিমান নিয়ে সদর্পে উপস্থিত রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। এ বিমানটি সেই ২০১৫ সাল থেকে বাজার দখল করে আছে এবং ইতিমধ্যে ৪৮০টি বিমান বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিমানবহরের অংশ হয়ে গেছে। তাই চমক না দিলেও এয়ারবাস ক্রয়াদেশ বাগাতে বোয়িং থেকে অনেক এগিয়ে থাকবে বলেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

দুবাইয়ে প্রথম এয়ার শো শুরু হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। দুই বছর পর পর টারসাস অ্যারোস্পেস এমন জমজমাট এয়ার শোর আয়োজন করে থাকে। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ বছর দর্শনার্থীর সংখ্যা লাখের ঘর ছাড়িয়ে যাবে।

Related posts

প্রতি মুহূর্তে ‘ধর্ষণের ভয় ছিল, মৃত্যুর ভয় ছিল।’: মিয়া স্কিম

Megh Bristy

Nvidia AI চিপ চীনে না পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

Samar Khan

নতুন জিন যথেচ্ছ ব্যবহারে,দেশে ব্যাকটেরিয়ায় কার্যকারিতা হারাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক

Asma Akter

Leave a Comment