ওসামা বিন লাদেনের দুই দশকের পুরোনো চিঠিটি আগেই সরিয়ে নিয়েছে টিকটক। ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার মুখে ওই চিঠি-সম্পর্কিত যত ভিডিও ছড়িয়েছে, তার সবগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
এই চিঠিতে ওসামা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থাপনার ওপর চারটি আত্মঘাতী হামলার কারণ তুলে ধরে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়।
বিবৃতিতে টিকটক বলেছে, এই চিঠির বিষয়বস্তু সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে বলে তা কোম্পানির নিয়মের লঙ্ঘন। প্ল্যাটফর্মটি ‘সক্রিয় ও ব্যাপকভাবে’ এই কনটেন্ট সরিয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি চিঠিটির প্রচার কীভাবে শুরু হয়েছে, তা নিয়েও তদন্ত করছে টিকটক।
গার্ডিয়ানের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ২০০২ সালের লাদেনের এক চিঠির উল্লেখ করা হয় এসব ভিডিওতে। গত সপ্তাহের শুরুতে একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ছড়িয়ে পড়ে ও ভাইরাল হয়। ধারণা করা হচ্ছে, লিনেট অ্যাডকিনস নামে একজন টিকটক তারকার অ্যাকাউন্ট থেকে বিষয়টি সামনে আসে। টিকটকটিতে ‘লেটার টু আমেরিকা’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়। লিনেট অ্যাডকিনসের সেই ভিডিও প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ দেখেছে। পরে অবশ্য টিকটক কর্তৃপক্ষ সেই ভিডিও মুছে ফেলে।
চিঠিটি এমন একসময়ে আলোচনায় আসল, যখন মধ্যপ্রাচ্যে গাজাকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অসম লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ‘লেটার টু আমেরিকা’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে টিকটকের ভিডিওগুলো প্রায় এক কোটি ভিউ হয়।
লেখক ইয়াশার আলি টুইটারের এক পোস্টে বলেন, টিকটকের ‘হাজার হাজার’ ভিডিও এক্সেও ছড়িয়ে পড়ছে। আলির নিজের পোস্টই ১১ হাজারের বেশি রিটুইট ও ২৩ লাখ ৮০ হাজার ভিউ পেয়েছে।
সব বয়স, জাতি ও শ্রেণির মানুষ টিকটকের এই ভিডিওগুলো শেয়ার করেছে। অনেকেই বলছেন, চিঠি পড়ে তাঁদের চোখ খুলে গেছে এবং ভূরাজনৈতিক বিষয়গুলোকে তাঁরা আগের মতো করে দেখবেন না।
এই চিঠিটি সরিয়ে দিয়ে গার্ডিয়ান বলেছে, গার্ডিয়ানে প্রকাশিত চিঠির অংশবিশেষ ‘প্রেক্ষাপট ছাড়া খণ্ডিতভাবে’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা হয়েছে। এ জন্য চিঠিটি সরিয়ে ফেলে মূল সংবাদ প্রতিবেদনটির দিকে পাঠকদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস বলেছে, ‘আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা করার পর আল-কায়েদার নেতা যে বিদ্বেষপূর্ণ, বাজে ও ইহুদিবিরোধী মিথ্যা প্রচার করেছেন তা কখনোই যুক্তিযুক্ত নয়।’