লাইফ স্টাইলসর্বশেষ

ত্বক ও চুলের যত্নে অ্যালোভেরা

পৃথিবীর সবচেয়ে রূপবতী নারীদের নামের তালিকার শুরুর দিকেই থাকবেন রানি ক্লিওপেট্রা। মিসরের লোককাহিনি বলছে, রূপচর্চায় অ্যালোভেরা ব্যবহার করতেন রানি। অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চায় এক ভরসার নাম। এদিকে দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। সেই সঙ্গে ত্বক আর চুলে স্পর্শ করতে শুরু করেছে রুক্ষতা। শীতের আগমনীতে জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে বারান্দা বা ছাদের ঘৃতকুমারী দিয়ে আপনার ত্বক আর চুলের যত্ন করবেন।

কীভাবে ত্বকে, চুলে ব্যবহার করবেন অ্যালোভেরা

হার্বস আয়ুর্বেদিক ক্লিনিকের রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমি বলেন, ‘১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ১ চা–চামচ গ্লিসারিন আর ২ চা–চামচ ময়দা (না থাকলে চালের গুঁড়া) ও কয়েক চামচ উষ্ণ গরম দুধ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে মুখে ও গলায় ব্যবহার করুন। শুকিয়ে এলে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। অন্যদিকে চুলের জন্য ভিজিয়ে রাখা মসুরের ডাল ব্লেন্ড করে সেটা অ্যালোভেরার জেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথার তালুতে, চুলে ব্যবহার করতে হবে। তাতে চুল হবে খুশকিমুক্ত আর ঝলমলে। চট করে বাজার থেকে অ্যালোভেরা কিনে বা বাগান থেকে অ্যালোভেরা ছিঁড়ে জেল লাগানো যাবে না। কেননা, এর জেলে কিছু বিষাক্ত উপাদান থাকে। সেগুলো ত্বকে অ্যালার্জিসহ নানান জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। তাই অ্যালোভেরা থেকে জেল বের করে সেটা দুই মিনিট ফুটন্ত পানিতে রেখে তৈরি করতে হবে অ্যালোভেরা স্টেম। এই অ্যালোভেরা জেলের স্টেম ৭ থেকে ১০ দিন ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করা যায়।’

কী আছে ঘৃতকুমারীতে

প্রশ্নটা হওয়া উচিত কী নেই ঘৃতকুমারীতে। রিডার্স ডাইজেস্ট অনুসারে অ্যালোভেরা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজের এক সমৃদ্ধ উৎস। এখানে আছে ভিটামিন এ, সি, ই, ফলিক অ্যাসিড, বি-১, বি-২, বি-৩ (নিয়াসিন) ও ভিটামিন বি-৬। অল্প কিছু উদ্ভিদের ভেতর ঘৃতকুমারী একটি, যাতে ভিটামিন বি-১২ আছে। আছে প্রায় ২০ ধরনের খনিজ। আরও আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ। অ্যামিনো আর ফ্যাটি অ্যাসিডেরও ভালো উৎস এই অ্যালোভেরা।

কেন খাবেন, ব্যবহার করবেন ঘৃতকুমারী

ত্বকের নানা ক্ষত সারিয়ে তুলতে কার্যকরী। রোদে পোড়া, ত্বকে ফুসকুড়ি পড়া ও পোকার কামড়ের মতো বাহ্যিক সমস্যাগুলো সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। বাহ্যিক ক্ষতে ঘৃতকুমারীর রস মাখলেও ব্যথার উপশম হবে, কেননা বেদনানাশক হিসেবেও এটা অতুলনীয়। চুল পরিষ্কার করতে, চুলে পুষ্টি জোগাতে এবং চুল ঝলমলে উজ্জ্বল রাখতে ঘৃতকুমারীর রস দারুণ কাজের। নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস খেলে আপনার বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণে আনাও সহজ হবে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে ত্বককে মসৃণ ও কোমল রাখতে আজকাল প্রসাধনী তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় ঘৃতকুমারীর নির্যাস।

ত্বক ও চুলের যত্নে ঘৃতকুমারী

১. অ্যালোভেরাতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ত্বক থেকে বয়সের ছাপ, ব্রণের দাগ, ট্যান দূর করে।

২. নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহারে ত্বকে আসে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা। অ্যালোভেরা প্রাকৃতিক হাইলাইটার।

৩. অ্যালোভেরাতে থাকা অ্যান্টি-ফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রণ নিরাময়ে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ দূর হয়। গরমকালে অ্যালোভেরার ভেতর থেকে জেল বের করে আইস ট্রেতে বরফের কিউব তৈরি করেও ব্যবহার করতে পারেন। ঘৃতকুমারীর নির্যাসের সঙ্গে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ত্বকে আলতোভাবে ঘষতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে ধীরে ধীরে মেছতার দাগ কমে যাবে।

৪. অ্যালোভেরার অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি–ফাঙ্গাল উপাদান চুল পড়া ও খুশকির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেও কার্যকর।

৫. ঠোঁটের মৃত কোষ দূর করতে চালের গুঁড়ার সঙ্গে ঘৃতকুমারীর রস মিশিয়ে ঘষতে পারেন। নিয়মিত ঘৃতকুমারীর জেল ব্যবহারে ঠোঁট থাকবে উজ্জ্বল ও কোমল।

Related posts

৩৮০ কোটি টাকা বকেয়া ইন্টারনেটে ধীরগতির জন্য বিটিসিএলসহ ১৯ গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানের

Rubaiya Tasnim

বিয়ে করলে রোগ সারে!

Samar Khan

এসইও মার্কেটিং কি? কত প্রকার ও কি কি ব্যাখ্যা কর।

Megh Bristy

Leave a Comment