বিজ্ঞানলাইফ স্টাইল

আপনি কি জানেন ‘ব্রেন ফগ’ কি ?

ব্রেন ফগ

‘ব্রেন ফগ’ আসলে কোনও চিকিৎসার পরিভাষা নয়। কিন্তু এই শব্দটি একটি মানসিক অবস্থাকে ব্যাখ্যা করে। কাজের চাপ, বাড়ির চাপ, তার সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়ন ইত্যাদি দীর্ঘদিন ধরে জমতে জমতে একদিন নিজেকে মানসিক ভাবে খুব ক্লান্ত মনে হয়। কোনও সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়। মনে হয়, শরীরের বিশ্রাম দরকার। যেন মানসিক শান্তি দরকার। এটাকেই এক কথায় বলা হয় ‘ব্রেন ফগ’। মানসিক চাপ ছাড়াও ঘুমের অভাব, ঠিকমতো বিশ্রাম না নেওয়া, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি দায়ী থাকে ‘ব্রেন ফগ’-এর পিছনে।

‘ব্রেন ফগ’-এর কারণ:

সারাদিন বিশ্রাম নেওয়ার সময় পান না? রাতেও ঠিকমতো ঘুম হয় না? অনিদ্রার সমস্যা রয়েছে? এগুলো আপনার নিউরোট্রান্সমিটার ব্যালেন্সকে নষ্ট করে দেয়, যা জ্ঞানীয় প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি তৈরি করে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। দিনের পর দিন মানসিক চাপ বাড়তে থাকলে দেহে কর্টিসল হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়। এগুলো ‘ব্রেন ফগ’-এর সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। ‘ব্রেন ফগ’-এর পিছনে দেহের পুষ্টির অভাবও দায়ী হতে পারে। ২০২১ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র থেকে জানা গিয়েছে, ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি মস্তিষ্কের কার্যকারিতার উপর প্রভাব ফেলে।

হার্ভা‌ড হেলথ পাবলিশিংয়ের মতে, কোভিড পরিস্থিতিও ‘ব্রেন ফগ’-এর জন্য দায়ী। কোভিড পরিস্থিতি কেটেছে অনেক দিন হল। কিন্তু তার প্রভাব রয়েছে। করোনা ভাইরাসের সঙ্গে ‘ব্রেন ফগ’-র কোন যোগসূত্র নেই। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে যে শারীরিক ব্যথা, ক্লান্তি ও কাজ করার অক্ষমতা এবং অনিদ্রার সমস্যা তৈরি হয়েছিল, যা ‘ব্রেন ফগ’-এর ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে।

‘ব্রেন ফগ’-এর পরিস্থিতি কীভাবে কাটিয়ে উঠবেন?

খাওয়া-দাওয়া: ডায়েটের দিকে নজর দিলে আপনি এই মানসিক ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে পারেন। অতিরিক্ত মিষ্টি ও ভাজাভুজি খাবার আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে। এসব খাবার পেটে এমন ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয়, যা শারীরিক ক্লান্তি বাড়িয়ে তোলে। তার সঙ্গে রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। পুষ্টিকর খাবার খেলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যও ভাল থাকে।

শরীরচর্চা: মানসিক চাপ কমাতে গেলে শরীরচর্চাও জরুরি। শরীরচর্চা করলে দেহে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। পাশাপাশি দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। তার সঙ্গে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হয় না। এই সমস্ত বিষয়গুলো মানসিক ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

মানসিক চাপ কমান: ধ্যান বা মেডিটেশনের মাধ্যমে আপনি মানসিক চাপ কমাতে পারেন। পাশাপাশি মনোবিদ বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।

সূর্যের আলো: সূর্যের আলো আপনার মনের খেয়াল রাখতে পারে। সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে সূর্যের আলো। তাই  সূর্য ওঠা ও ডোবার সময় কিছুক্ষণ সেই আলোতে দাঁড়ান।

Related posts

কাশি নিরাময়ের নয়টি ঘরোয়া উপায়?

Megh Bristy

দুবাইয়ে সবচেয়ে উঁচু রেস্তোরাঁর রেকর্ড অর্জন

Asma Akter

ঈদে সুস্থ থাকতে সেসব খাবার খাবেন

Asma Akter

Leave a Comment