দিন দিন মানুষ মানুষের থেকে বিশ্বাস হারাচ্ছে। এর কারণ- লেনদেন, কথাবার্তা, আচার-ব্যবহারে মানুষ মিথ্যা ও ধোঁকার আশ্রয় গ্রহণ করছে। আপনজনও আপনজনকে বিশ্বাস করতে পারে না। কেননা তাদের কথা আর কাজে থাকে অনেক ব্যবধান। এমন লোকের সংখ্যা অনেক, যারা মানুষকে আকৃষ্ট করতে, বিশ্বাস অর্জন করতে ভালো ভালো কথা বলে বেড়ায় আর নিজেরা থাকে আমলশূন্য। তাদের কথা কাজ হয় দ্বিমুখী। এরা মুনাফিক। ইসলামের গোপন শত্রু। স্বার্থ উদ্ধারের জন্য মানুষের সাথে মিষ্টি ভাষায় কথা বলে তাদের মনে রেখাপাত করে। তাদের কথা-কাজে কোনো মিল থাকে না। এর দ্বারা মানুষ প্রতারিত হয়। ইসলাম সম্পর্কে খারাপ ধারণা জন্মে। এমন হীন চরিত্র কোনো প্রকৃত মুসলমানের হতে পারে না। এ প্রসঙ্গে সতর্ক করে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘হে মু’মিনরা! তোমরা এমন কথা কেন বলো, যা করো না।’ (সূরা সফ-২)
কিয়ামতের আগে মুনাফিকের সংখ্যা বেড়ে যাবে। মানুষের মধ্য থেকে আমানতদারি ও বিশ্বাস উঠে যাবে। নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে মুনাফিকি চরিত্র দেখা দেবে। জনপ্রিয়তার জন্য তারা মানুষের সাথে প্রতারণামূলক কল্যাণ ও মঙ্গলের কথা বলবে। কিন্তু নিজেরা থাকবে স্বার্থসিদ্ধিতে। তাদের জুলুম-অত্যাচার থেকে কেউ রেহাই পাবে না। এরা মুখে ভালো কথার ফুলঝুরি ছড়াবে; কিন্তু নিজেরা থাকবে বহু দূরে।নবীজী সা: এমন মুনাফিকদের কারণে শঙ্কিত ছিলেন। এ ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহু সা: বলেছেন, ‘আমি এই উম্মতদের এমন মুনাফিকদের কারণে শঙ্কিত, তারা ইলম ও হিকমতের কথা বলবে। আর জুলুম ও কঠোর ব্যবহার করবে।’ (মিশকাত, পৃষ্ঠা-৪৫৬)
মুনাফিকরা নিজেদের চতুর ও জ্ঞানী মনে করে। তারা ভাবে, তাদের হেকমত ও মুখরোচক আলোচনা আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন। বিনিময়ে তাদের জন্য রয়েছে অনেক প্রতিদান। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তো বাহ্যিক দেখেন না। তিনি দেখেন বান্দার অন্তর। আর মুনাফিকদের অন্তর নিতান্তই অসার। যে কারণে তাদের আমলের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি জ্ঞানী ব্যক্তির প্রতিটি কথা গ্রহণ করি না; বরং আমি তার নিয়ত ও প্রেরণাকে কবুল করি। সুতরাং তার নিয়ত ও প্রেরণা যদি আমার আনুগত্যের অনুকূলে হয়, তাহলে আমি তার নীরবতাকে আমার প্রশংসা এবং তার জন্য একে স্থিরতা ও সহিষ্ণুতার অন্তর্ভুক্ত করি। যদিও মুখের দ্বারা সে কিছুই উচ্চারণ না করে থাকে।’ (মিশকাত, পৃষ্ঠা-৪৫৬
previous post
Related posts
- Comments
- Facebook comments