ইসলামে রোজা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। এ ছাড়া সারা বছর নফল রোখা রাখার ফজিলতও অনেক। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, মানুষের প্রতিটি নেক কাজ তার জন্যই; কিন্তু রোজা স্বতন্ত্র, তা আমার জন্য আর আমিই এর প্রতিদান দেব। সিয়াম ঢালের মতো, তাই তোমাদের কেউ যেন রোজা রেখে অশ্লীল কথা না বলে এবং হৈ-হট্টগোল না করে। যদি কেউ তাকে গালি-গালাজ করে অথবা তার সাথে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, ‘আমি রোজা রেখেছি।’
রাসুল (সা.) বলেন, ওই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন, নিঃসন্দেহে রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধের চেয়ে বেশি প্রিয়। রোজাদারের জন্য দু’টি আনন্দময় মূহূর্ত রয়েছে, এক. যখন সে ইফতার করে দুই. যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে এবং রোজার প্রতিদান লাভ করবে (সহিহ বুখারি: ১৯০৪, সহিহ মুসলিম: ২৭৬২)
রাসুল (সা.) রমজানের রোজার পাশাপাশি সারা বছরই প্রচুর নফল রোজা রাখতেন। বিশেষত প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার তিনি রোজা রাখতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। ( সুনানে তিরমিজি)
বিশেষভাবে এ দুদিন রোজা রাখার কারণও বর্ণিত হয়েছে আরেকটি হাদিসে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, প্রতি বৃহস্পতি ও সোববার আল্লাহ তাআলার কাছে বান্দার আমলসমূহ পেশ করা হয়। আমি চাই আমার আমলসমূহ যেন রোজা রাখা অবস্থায় পেশ করা হয়। (সুনানে তিরমিজি, নাসাঈ)
সারা বছর দিন বড় ও গরম থাকায় যারা সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার সুন্নতটি পালন করতে পারেন না, শীতের ছোট দিনগুলোতে তারা সহজে এ সুন্নত পালন করতে পারেন। আমের ইবনে মাসউদ বর্ণনা করেন, নবিজি (সা.) বলেছেন, শীতল গনিমত হচ্ছে শীতকালে রোজা রাখা। (সুনানে তিরমিজি)
মুসনাদে আহমদে আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘শীতকাল মুমিনের বসন্তকাল।’ বায়হাকিসহ অনেকের বর্ণনায় এভাবে এসেছে, ‘শীতকাল মুমিনের বসন্তকাল; কারণ শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাত্রিকালীন নফল নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।’ অর্থাৎ সহজে অনেক ফজিলতপূর্ণ ইবাদতের সুযোগ লাভের কারণে শীতকাল মুমিনের জন্য বসন্তকাল হয়ে ওঠে।