ইমানের প্রতিদান জান্নাত। ইমানদার ব্যক্তি জান্নাতে যাবেই। ইমানদারের কোনো গুনাহ থাকলে ওই গুনাহের শাস্তি ভোগ করার পর এক সময় সে জান্নাতে যাবে অথবা আল্লাহ অনুগ্রহ করে তার গুনাহ মাফও করে দিতে পারেন। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই বলবে এবং এ বিশ্বাস নিয়ে কিয়ামতের দিন হাজির হবে, আল্লাহ তার ওপর জাহান্নাম হারাম করে দেবেন। (সহিহ বুখারি: ৫৯৮০)
আরেকটি হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি এ ঘোষণা দেবে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, তার কোনো শরিক নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও তার রাসুল এবং মারইয়ামের (আ.) ছেলেও (নবি ইসা আ.) আল্লাহর বান্দা ও তার রাসুল, তার বান্দির সন্তান ও আল্লাহর কালিমা- যা তিনি মারইয়ামের (আ.) প্রতি প্রেরণ করেছিলেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত ‘রুহ’, আর জান্নাত-জাহান্নাম সত্য- তার আমল যা-ই হোক না কেন আল্লাহ তাআলা তাকে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (সহিহ বুখারি: ৩৪৩৫, সহিহ মুসলিম: ২৮)
এ হাদিসে খৃষ্টানদের অপবিশ্বাস ত্যাগ করার শর্তও এসেছে। ইসলামের বিশ্বাস বিরোধী সব ধরনের অপবিশ্বাস ত্যাগ করা ইমানের শর্ত। যে ব্যক্তি সব ধরনের অপবিশ্বাস ত্যাগ করে আল্লাহর ওপর ইমান আনবে ও ইসলাম গ্রহণ করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করবেন।
আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিখ্যাত সাহাবি মুআজ ইবনে জাবালকেও (রা.) এ কথা বলেছিলেন এবং আশংকা প্রকাশ করেছিলেন এ সংবাদ মানুষকে দিলে মানুষ ভুল বুঝে আমল ছেড়ে দিয়ে এর ওপর ভরসা করে বসে থাকি কি না! আনাস (রা.) বলেন, একবার মুআজ (রা.), নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পেছনে সওয়ারিতে বসে ছিলেন, তখন তিনি তাকে বললেন, যে কোনো বান্দা অন্তরের বিশ্বাসের সাথে এ সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল, তার জন্য আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম হারাম করে দেবেন। মুআজ (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি কি মানুষকে এ সুসংবাদ দেব না? তিনি বললেন, তাহলে তারা এর উপর ভরসা করে বসে থাকবে। (সহিহ বুখারি: ১২৮)
এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, ইমানের এ মহাপ্রতিদানের কথা জেনে নেক আমল বাদ দেওয়া যাবে না। যত বেশি সম্ভব নেক আমল করতে হবে। নেক আমলই মৃত্যু পর্যন্ত ইমানের ওপর অবিচল থাকতে শক্তি যোগায় এবং ইমানদার অবস্থায় মৃত্যু বরণের তওফিক লাভের কারণ হয়।