ইসলাম ধর্মসর্বশেষ

ট্রান্সজেন্ডার প্রসঙ্গে: মানুষ লিঙ্গের দিক দিয়ে পাঁচ শ্রেণীতে বিভক্ত

pickynews24

এর মধ্যে প্রথম প্রকার : রজুল-পুরুষ : সবাই জানে পুরুষ কাকে বলে। মাংসপেশিতে প্রকাশ পায়, কণ্ঠনালীর বাজনায়, মুখের চিবুকে, নাকের গুম্ফে, বুকের আঙিনায়, যেসব অঙ্গ গুপ্ত করে রাখা হয় সেই গ্রামে, হাত পায়ের রোমশ কাঠিন্যে, চুলের তলদেশে পুরুষ পুরুষই হয়।

দ্বিতীয় প্রকার : উনসা-মেয়ে : সবাই জানে মেয়ের সংজ্ঞা। মাথার চাঁদি থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত সবটাই মেয়েময়। ভেতরে ওভারি আছে, বাচ্চাদান আছে, রক্তের সাগর আছে, মাসে মাসে সে রক্তের প্রকাশ আছে। মেয়ে মেয়েই হয়।উপরের দুই শ্রেণীতে কখনো উপাচার হয়। ওদেরকে মনোরোগে পায়। বলা হয়েছে, অতঃপর শয়তান আদম ও হাওয়াকে কুপরামর্শ দিলো, যাতে ওদের যে লজ্জার অঙ্গগুলো গোপন ছিল তা যেন প্রকাশ করে দিতে পারে।
একদম ছেলে, কিন্তু মেয়েদের টেম্পটিং ভাষা, মুখের বঙ্কিমতা, চোখের লোচনীয় ধনুকবাঁকা তীরের ফলা ও গ্রীবার থর-থর-থর প্রথম কুমারীর কম্পন এমন ভাবে তোলে ছেলেরা তাকে দেখে ফাঁদে পড়ে যায়। দেখা যায় যেন এক আস্ত মেয়ে। কিন্তু তাদের হাতের মাসল বক্র হয়ে ওঠে, পা ফড়িং লম্ফ দেয়, মুখ শক্ত শালুক ফুটায়, আর গায়ে প্রকাশ পায় ছেলের সব কিছু। এরা সবাই শয়তানের আঘাতে অসুস্থ। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস। এদেরকেই মহানবী সা: অভিশাপ দিয়েছেন, তাদেরকে যারা পুরুষ তথাপিও মেয়ে হতে চায়। তিনি অভিশাপ দিয়েছেন, ওই সব মেয়েদের, যারা পুরুষ হতে চায়। তিনি বলেছেন, ওদেরকে তোমরা ঘর থেকে বের করে দাও। তিনি নিজেই একজনকে বের করে দিয়েছিলেন, হজরত উমার রা:ও একজনকে বের করে দিয়েছিলেন।

কারণ তাদের স্পষ্ট জেন্ডার থাকার পরও তারা উৎকট কিছু চেয়েছে। এরাই ট্রান্সজেন্ডার নামে নিজেদের পরিচিত করছে। এরা তাদের জেন্ডার পরিবর্তন করতে চায়। এদের মানসিকতাকে আল্লাহর নবী সা: পছন্দ করেননি।

তৃতীয় প্রকার : খুন্সা রাজুল-পুরুষ খুন্সা : এদের গুপ্তাঙ্গে সমস্যার কারণে পুরুষ বা নারী পরিচয় নিয়ে গণ্ডগোল বাঁধে। গুপ্তাঙ্গটা ঢেকে রাখলে এর শরীরে সবটাই পুরুষালী বোঝা যাবে।

চতুর্থ প্রকার : খুন্সা উনসা-মেয়ে খুন্সা : এদেরও গুপ্তাঙ্গের সমস্যা। তবে এটি ঢেকে রাখলে আর সবে নারীত্ব উদ্ভাসিত।এই দুই শ্রেণীর মানুষের পাশে ডাক্তারদের দাঁড়াতেই হবে। এদের চিকিৎসা দিয়ে লিঙ্গ ‘পরিবর্তন’ করা যাবে না, তবে লিঙ্গের ‘সংস্কার’ করা যাবে। যার জঠর আছে, অভারি আছে, নারীত্বের উদ্ভাস আছে, তাদের অপারেশন করে নারী বানাতে হবে। শরীরের সবগুলোর সাথে এই অঙ্গটাকেও সামঞ্জস্য করে দিতে হবে। তারা মেয়ে। তাদের গোপনীয়তা রক্ষা করে সমাজ সংসারে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বিয়ে তার না হোক নারীত্ব নিয়ে সে যেন কখনোই মনুষ্য সমাজ থেকে মনে আঘাত না পায়, তার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র, পরিবার পরিজন ও সমাজ সব ধরনের আইনগত ও কাঠামোগত সুযোগ তৈরি করবে।

যার পেশি সবল, দাড়ি-গোঁফের চাঞ্চল্য, দেহের সবটাই পুরুষের উন্মত্ততা, তার গুপ্তাঙ্গকে ডাক্তাররা সংস্কার করে দেবে, যাতে পুরুষ হয়ে সমাজের সব কাজে অংশ নিতে পারে। দেশ পরিচালনায় হাত দিতে পারে। শিক্ষায় দীক্ষায় আর সবার মতো জায়গা পেতে পারে।
চিকিৎসা যখন উন্নত হয়নি, বিজ্ঞান যখন চাঁদে উঁকি দেয়নি, মনোবিজ্ঞান যখন মানবতার উন্নয়নে ভূমিকা রাখা শুরু করেনি তখনকার সমাজে এদেরকে নিয়ে কষ্ট হয়নি, এরা মিছিল করেনি, এক বেলা খাওয়ার জোগাড় করতে গুপ্তাঙ্গ কাউকে দেখাবার প্রয়োজন বোধ করেনি। তারা মন্ত্রীও হয়েছিল মুসলিম খেলাফতে, সেনাপতিও ছিল যুদ্ধের ময়দানে, শিক্ষকও হয়েছিল স্কুলে দরগাহে। তারা মানুষ ছিল, মানুষের মাঝেই ছিল। তাদের অর্থ হতো, বিত্ত হতো, তারা কবি হতো তাদের লেখা গীতও গাওয়া হতো। বিজ্ঞান উন্নত হয়নি বলে বিশাল ইসলামী সাম্রাজ্যের খলিফা আলী ইবন আবি তালিব তাদের জেন্ডার নিরূপণের পদ্ধতি বলে দিয়েছিলেন :
রাষ্ট্রের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি তাদের পরীক্ষা করবে। ‘যদি পুরুষের নালী দিয়ে পেশাব করে সে ছেলে, আর নারীর যোনিপথে যদি সে পেশাব করে তাহলে মেয়ে।’ আজকের বিজ্ঞান এত উন্নত যে পেশাব করে চেনার দরকার হবে না ইনশাআল্লাহ। হরমোনের পরীক্ষায় তারা উদ্ধার করতে পারবে এই মানব সন্তানের জেন্ডার কোন দিকে বেশি ধাবমান।অথচ আজকের এই উন্নত যুগে বাংলাদেশে এদের হিজড়া বলে তৃতীয় লিঙ্গ বানিয়ে মানুষ জাতি থেকে ভিন্ন হিসেবে দেখিয়েছে। আমি মনে করি এতে রাষ্ট্র যেমন তাদের ওপর জুলুম করেছে, সমাজ যেমন তাদের সাথে অমানবিক কাজ করেছে, পরিবারও তাদেরকে সব কিছু থেকে বঞ্চিত করে আল্লাহর গজব কিনেছে।

পঞ্চম প্রকার : খুন্সা মুশকিল-কনফিউজিং খুন্সা : এদের গুপ্তাঙ্গের স্থলে কোনো কিছুই প্রকাশ পায় না, কোনো কিছুই বোঝা যায় না। না শরীরে, না অন্য কোথাও। এদের সংখ্যা দুনিয়াতে হাতেগোনা। এদের ব্যাপারেও শরিয়ত পরীক্ষা করতে পরামর্শ দেবে। তাও দায়িত্বশীল পর্যায়ে। থাকবে ফিজিশিয়ান, মনোবিজ্ঞানী, কোর্টের প্রতিনিধি, আলিম ও স্কলার। বিভিন্ন ক্ষেত্র পর্যালোচনা করে এবং এই মানবসন্তানের মানসিক অবস্থার বিবেচনা করে রাষ্ট্র ফায়সালা করবে এবং সে অনুযায়ী তাকে বড় হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
শেষের এই তিনটি শ্রেণীকে আমাদের দেশে হিজড়া শ্রেণীতে ফেলে দিয়েছি, অথচ ওরা মানবসম্প্রদায়, ওদের সব অধিকার প্রাপ্তির সুবন্দোবস্ত সরকারের সব বিভাগ করে দেবে, এটিই ছিল বিগত দেড় হাজার বছরের মুসলিম সংস্কৃতি। ইংল্যান্ডে অনেক হিজড়া আছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ তাদের আলাদা ভাবেনি। নিজ নিজ বাড়িতে তাদের জায়গা অন্য সবার মতোই।

বুঝি না আমাদের দেশের কিছু জ্ঞানপাপী এই হিজড়াদের সাথে আরেকটা মানসিক রোগীদের এক করে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে কেন? আর এমনকি স্কুলের ছাত্রদেরকেও ভুল বোঝানোর পাঁয়তারা করছে কেন? ট্রান্সজেন্ডার হলো মানব লিঙ্গের প্রথম দুই শ্রেণীর মধ্য হতে। কোনো পুরুষ মনে করছে সে মেয়ে বা কোনো মেয়ে মনে করছে সে ছেলে। অমনি ডাক্তার, সরকার, উকিল মোক্তার সবাই তার পক্ষে গিয়ে পুরুষ হতে চাওয়া নারীকে পুরুষ বানাচ্ছে বা নারী হতে চাওয়া পুরুষকে নারী বানাচ্ছে। এটা শুধু অন্যায় নয়, কেবল কবিরাহ গুনাহ নয়, এ ধরনের কাজ নবী সা:-এর অভিশাপে শুধু পড়ে তা নয়, বরং এরা শয়তানের কুপরামর্শে ‘সৃষ্টি পরিবর্তনের’ অংশীদার।
শয়তান বলেছে : ‘আমি মানুষদের বলব, যেন তারা আল্লাহর সৃষ্টি পরিবর্তন করে ফেলে।’
অথচ আল্লাহ বলছেন, তোমার রোখ একনিষ্ঠভাবে দ্বীনের জন্য দাঁড় করাও, আল্লাহর দেয়া ফিতরাত তথা স্বাভাবিক সৃষ্টির যে নিরিখে মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন তাতেই তুমি স্থায়ী থাক, সন্তুষ্ট থাক। কারণ আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনো বিকৃতি আনা যাবে না।
বর্তমানে মানবসমাজের রোগগুলোকে সবাই যেন স্বাভাবিক করে দেখাতে ব্যস্ত হচ্ছে। মনোবিজ্ঞানের এত উন্নতি হওয়া সত্ত্বেও এ ধরনের মনোবিকৃতির চিকিৎসা কেউ করতে পারছে না। বরং যে রোগগুলো ধর্মের কোলে এসে মানুষ নিরাময় করতে পারত, তারা ধর্মকে বলা যায় ত্যাগ করে অমানুষ হওয়ার প্রতিযোগিতায় লেগেছে।

Related posts

৪ নভেম্বর চালু হচ্ছে অ্যাপ , ষষ্ঠ-সপ্তমের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে

Megh Bristy

জুলাই থেকে রাস্তায় নামবে রয়্যাল এনফিল্ড !

Megh Bristy

গ্রন্থাগার অধিদপ্তরে ১৪-২০তম গ্রেডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

Suborna Islam

Leave a Comment