ঘাড় ব্যথার কারণ এবং প্রতিকার ?
ঘাড় ব্যথা একটি অত্যন্ত বিরক্তিকর অবস্থা যা মানুষের জীবনকে অস্বাভাবিক করে তুলে। ঘাড়ের ব্যথার কারণ বিভিন্ন হতে পারে এবং এর জন্য প্রতিকারও বিভিন্ন হতে পারে। নিচে ঘাড় ব্যথার কিছু সাধারণ কারণ এবং তার প্রতিকারের উল্লেখ করা হলো:
কারণসমূহ:
১। দাঁতের সমস্যা:
দাঁতের সমস্যা যেমন দাঁতের ক্যাভিটি, দাঁতের ছেদ, দাঁতের পেশীর সমস্যা ইত্যাদি ঘাড়ে ব্যথা উত্পন্ন করতে পারে।
২। অন্যান্য মৌলিক সমস্যা:
কিছু মৌলিক সমস্যা যেমন নার্ভ সংক্রান্ত সমস্যা, অসময় ও অতিরিক্ত প্রেশাধীনতা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা ইত্যাদি ঘাড়ে ব্যথা উত্পন্ন করতে পারে।
৩। সার্ভিক্যাল স্পনডাইলোসিস:
ঘাড় ব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ হল সার্ভিকাল স্পনডাইলোসিস। মেরুদণ্ডের ক্ষয় রোগ হলো স্পনডাইলোসিস আর মেরুদণ্ডের ঘাড়ের অংশের ক্ষয়কে বলে সার্ভিকাল স্পনডাইলোসিস। আমাদের মেরুদণ্ড গঠিত হয় হাড়, মাংসপেশি, হাড়ের জোড়া ইত্যাদি নিয়ে।
সার্ভিক্যাল স্পন্ডাইলোসিসের কারণ-
বয়স বাড়ার রোগ এটি। স্পন্ডাইলোসিসের পরিবর্তন শুরু হয় ৪০ বছর বয়সের পর থেকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর আগেও শুরু হয় হাড়ের ক্ষয়।
আনুপাতিক হার পুরুষ বা নারী রোগীদের মধ্যে প্রায় সমান সমান।
যে পেশার মানুষের বেশি হয়
ঘাড় সামনে ঝুকিয়ে কাজ করতে হয় এমন সব পেশার মানুষদের এ রোগটি বেশি দেখা যায়। যেমন- শুধু চেয়ার টেবিলে বসে কাজ করে এমন এক্সিকিউটিভ, কম্পিউটারে একনাগাড়ে কাজ ইত্যাদি।
ঘাড়ের আঘাতের জন্যও অনেক সময় হাড় ক্ষয় দেখা দেয়।
উপসর্গ:
ঘাড়ের ব্যথা অনেক সময় কাঁধ থেকে উপরের পিঠে, বুকে, মাথার পেছনে বা হাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ঘাড় থেকে হাতে নেমে আসা স্নায়ু বা নার্ভের ওপর চাপ পড়লে পুরো হাতেই ব্যথা হতে পারে।
হাত পায়ে দুর্বলতা, হাঁটতে অসুবিধা হতে পারে।
ঘাড় নাড়াতে গেলে ব্যথা লাগে। ডানে বাম দিকে ঘাড় ঘুরাতে সমস্যা হবে। ঘাড়ে স্থবিরতা লাগে বা জ্যাম মেরে ধরে থাকে।
ব্যথার সাথে হাতে, বাহুতে ঝিন ঝ্নি, সির সির্, অবশ ভাব, সুচ ফোটানোর অনুভূতি সাথে হাত দিয়ে কাজ করতে অসুবিধা।
এমন ব্যথা হলে ঘাড়ের এম আর আই, ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফি পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ শনাক্ত করা হয়।
প্রতিকার:
ওষুধের পাশাপাশি এক্ষেত্রে ঘাড়ের বিভিন্ন ব্যায়াম করার পরামর্শ দেয়া হয়।
ঘাড় ব্যথা যেন না হয় এজন্য যা করতে হবে
• শক্ত সমান বিছানায় এক বালিশে চিত হয়ে ঘুমাতে হবে।
• ঘুমানোর সময় ঘাড়ের নিচে বালিশ দিতে হবে।
• দরকার হলে বালিশ নিচে টেনে নামিয়ে ঘাড়ের নিচে নেবেন।
• ঘাড় সামনে ঝুঁকে বেশিক্ষণ কাজ করা যাবেনা।
• ব্যথা বেশি হলে ঘাড়ে হালকা গরম সেক দিতে পারেন।
• এ সময় ঘাড়ের ব্যায়াম বেশ আরাম দেবে।
• সার্ভিক্যাল কলার ব্যবহার করা হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে।
ঘাড় ব্যথা যদি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যত্ন নেওয়া না হয় তাহলে এটি আরও মহল্লা বা জটিল সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সেজন্য নিয়মিত দাঁতের সেবা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য।