যৌতুকের দাবি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় পাষন্ড স্বামী ও সতীন রোজিনা বেগম নামে একজন গৃহবধূকে বেধরক মারপিট করে সমাজে কূলটা বানাতে মাথার চুল কেটে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, লাঞ্চনার শিকার ওই নারী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তারা তাকে গোপন করতে বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ে মৃত ভেবে ফেলে আসে।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ বাঁশঝাড় হতে অজ্ঞান অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে নির্যাতিতা ওই নারীর স্বামী নূর আলমকে আটক করেছে। এ ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মধুপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আফসার আলীর ছেলে নূর আলম তিন বছর আগে জেলার রানীশংকৈল উপজেলার গোগর সরকারপাড়া গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে রোজিনা বেগমকে বিয়ে করে। বিয়ের পর তাকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও শহরে এক ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকে নূর আলম। এদিকে নূরুর ব্যবসার টাকা লাটে উঠলে পূনরায় ব্যবসা চালু করার জন্য রোজিনার কাছে দেড় লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে।
কিন্তু পিতৃমাতৃহীন রোজিনা সে টাকা দিতে না পারায় শুরু অকথ্য নির্যাতন এবং স্বামীর শত নির্যাতন সহ্য করতে থাকে। এদিকে মঙ্গলবার রাতে নূর আলম রোজিনার ভাড়া বাসায় উঠে এবং যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেয়। বুধবার সকালে নূর আলম রোজিনার মোবাইল ফোন নিয়ে গ্রামের বাড়ি মধুপুর গ্রামে চলে আসে। বিষয়টি টের পেয়ে রোজিনাও নূর আলমের গ্রামের বাসায় আসে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে নূর আলম ও তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং তার দুই ছেলে। এ নিয়ে কথাবার্তার এক পর্যায়ে নূর আলম রোজিনার মাথার চুল ধরে টানতে টানতে তাকে কাবু করে এবং তার প্রথম স্ত্রী রুনা ও তাদের দুই ছেলে রোজিনাকে বেধরক মারপিট করে। শুধু তাই , রোজিনা যাতে পরবর্তীতে ওই বাড়িতে আসতে না পারে সেজন্য সমাজে কূলটা বানাতে তার মাথার চুল কাচি দিয়ে কেটে দেয় সতীন রুনা বেগম। তারপরও থামেনি তাদের নির্যাতন। এক পর্যায়ে রোজিনা বেগম জ্ঞান হারিয়ে ফেললে মৃত ভেবে তার লাশ গোপন করার উদ্দেশ্যে বাড়ির পাশে বাঁশ ঝাড়ে ফেলে দেয় তারা।
এদিকে খবর পেয়ে রুহিয়া থানার পুলিশ একটি বাঁশঝাড় হতেগৃহবধূ রোজিনাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রোজিনার স্বামী নূর আলমকে আটক করে।
রুহিয়া থানার ওসি সোহেল রানা জানান, গৃহবধূকে মারপিট করে মাথার চুল কেটে দিয়ে বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখার ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল হতে গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। প্রধান আসামী নূর আলমতক গ্রেফতার করা হয়েছে।