ঢাকার খবরবাংলাদেশেস্বাস্থ্য

চোখে অবিরত পানি পড়লে, ও লাল দেখা দিলে

বর্ষা-বৃষ্টির কারণে ভ্যাপসা পরিবেশে রোগজীবাণুর সংক্রমণ একটু বেড়েই যায়। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। এ সময়ে বাড়ে কনজাঙ্কটিভাইটিসের প্রাদুর্ভাবও। ফলে চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ে।

কনজাঙ্কটিভাইটিসের মূল কারণ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে অ্যালার্জি বা আঘাত পাওয়ার কারণেও এটি হতে পারে। কনজাঙ্কটিভাইটিসকে পিংক আই বা রেড আইও বলে। সময়মতো ও সঠিক চিকিৎসা না হলে দীর্ঘদিন এ রোগে ভুগতে পারেন। পাশাপাশি চোখের কর্নিয়ারও ক্ষতি হয়।

লক্ষণ ও চিকিৎসা

চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জ্বালা, চুলকানি, ব্যথা, চোখ খচখচ করা, পানি পড়া, আলোর দিকে তাকাতে কষ্ট হওয়া ইত্যাদি। অনেক সময় চোখের পাতা আঠার মতো জুড়ে যায়, চোখে ময়লার আস্তরণ পড়তেও দেখা যায়। এসব লক্ষণ দেখা দিলে চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

  • চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি বাড়িতেও চোখের বিশেষ যত্ন নিতে হবে।
  • পরিষ্কার কাপড় হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে পানিটা নিংড়ে নিন। কয়েক মিনিট ভেজা কাপড়টি চোখের ওপর আলতোভাবে লাগিয়ে রাখুন। এ ছাড়া হালকা গরম পানিতে এক চিমটি লবণ দিয়ে তাতে তুলা ভিজিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে পারেন।
  • চোখ ঘষা বা স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন; কারণ, এতে চোখে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে।
  • চোখের সংক্রমণ হলে কন্ট্যাক্ট লেন্স পরবেন না, যতক্ষণ না চোখ ভালো হয়। কারণ, লেন্সে ব্যাকটেরিয়া আটকে থাকতে পারে। ফলে চোখের সমস্যা আরও বাড়বে।
    • চোখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন। বাইরে থেকে ফিরে কাজটি করতে হবে। চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শে চোখের ড্রপ বা মলম দিতে পারেন। সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে সেরে যাবে।

    পরামর্শ

    কনজাঙ্কটিভাইটিস ভাইরাস প্রতিকারে সুনির্দিষ্ট ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন নেই। কিছু নিয়ম মেনে চললে এ রোগ থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকা যায়।

    • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা কনজাঙ্কটিভাইটিস প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। বাইরে থেকে ফিরে হাত ধোয়া, বিশেষ করে খাওয়ার আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
    • ঘরের চারপাশ পরিষ্কার রাখুন। ধুলাবালু, অ্যালার্জেনের কারণে কনজাঙ্কটিভাইটিস হতে পারে। কারও এ রোগ হলে তাঁর ব্যক্তিগত জিনিস ব্যবহার করবেন না। এ রোগ ছোঁয়াচে।
    • যেখানে মানুষের ভিড়, সেই সব জায়গা বর্ষাকালে কনজাঙ্কটিভাইটিসসহ বহু সংক্রামক রোগের প্রজননক্ষেত্র হয়ে ওঠে। তাই সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলুন।

    • বাড়ির বাইরে বের হলে সানগ্লাস ব্যবহার করুন। এ ছাড়া সাঁতার কাটার সময় চোখে চশমা ব্যবহার করতে হবে।

    স্বাস্থ্যকর খাবার ও পানি পান এ রোগ থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায়। প্রতিদিনের খাবারে খনিজ ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার রাখা, বিশেষ করে ভিটামিন ‘এ’ জাতীয় খাবার চোখের জন্য ভালো।

    • অধ্যাপক ডা. সৈয়দ এ কে আজাদ, চক্ষুরোগবিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন, বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ, আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢা

Related posts

বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনার নতুন ধরন:বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

Megh Bristy

সতর্ক হওয়া জরুরি, ছানি পড়ার আগেই

Asma Akter

এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র তিস্তার চরে

Samar Khan

Leave a Comment