সর্বশেষস্বাস্থ্য

সিজারিয়ান করান সবচেয়ে বেশি শিক্ষিতরাই,এর প্রভাব খুলনা অঞ্চলে বেশি

দেশে শিক্ষিত মানুষ ও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বীদের মধ্যে সিজারিয়ানের হার বেশি বলে জানিয়েছেন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলোজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সভাপতি অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান।

সি-সেকশনের বর্তমান প্রেক্ষাপট আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাইভেট সেক্টরে সি-সেকশন সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। এমনকি যারা শিক্ষিত ও চাকরিজীবী তাদের মধ্যে সি-সেকশনের প্রবণতা বেশি। এছাড়া বাংলাদেশে সি-সেকশনের হার খুলনা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নাগরিকমঞ্চ ও বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের আয়োজনে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ ও তার বাস্তবায়ন-শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সিজারিয়ান যে সবসময় অকারণে করে তাও নয়। তবে অবারিত সিজারের ফলে দেখা যায় মানুষজন হাসপাতালেও যেতে চায় না। তারা ভাবে হাসপাতালে গেলেই সিজার করাবে। আবার অনেকে হাসপাতালে এসে জোর করে সিজার করার জন্য। তখন তাদের কাউন্সেলিং করা হয়। তবে জোরাজুরিতেও অনেক সময় করতে হয়।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, শহরাঞ্চলের মত গ্রামেও সি সেকশনের প্রবণতা এবং পরিমাণ বেড়েছে। তাই অপ্রয়োজনীয় সি সেকশন বন্ধ করার জন্য জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের মত স্থানীয় নাগরিক সংগঠনসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ধাত্রীদের আরও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের কথা বার বার আলোচনায় উঠে আসে।

বক্তারা আরও বলেন, যেসব প্রাইভেট ক্লিনিকে লেবার রুম নেই তাদের জন্য আইন করা উচিত, যাতে করে তারা সিজারিয়ান সেকশন করতে না পারে। হাইকোর্টের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে, সেটি স্বখাতের সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তি এবং সংগঠনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়। যাতে বিষয়টি নিয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রাশনা ইমাম জানান, সিজারিয়ান সেকশন করা হয় জীবন রক্ষার জন্য। কিন্তু সিজারিয়ান সেকশনের হার এত বেশি হওয়ার পরও মাতৃ মৃত্যুর হার কমছে না এবং এ মৃত্যুর হার না কমার জন্যই আমরা মনে করছি এ সি-সেকশনগুলো অপ্রয়োজনীয় বা মাত্রাতিরিক্ত।

তিনি সংবিধানের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে বলেন, সংবিধানে স্বাস্থ্যকে সরাসরি মৌলিক অধিকার বলে স্বীকৃতি না দিলেও বিভিন্নভাবে মৌলিক অধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ যদি সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা অর্জন করতে চায় তাহলে মাতৃস্বাস্থ্যকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো নারী যেন বৈষম্যের শিকার না হয় সেটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

এ উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ওজিএসবির সাবেক সভাপতি ফেরদৌসী বেগম, সাধারণ সম্পাদক সালমা রউফসহ আইনজীবী, সরকারী কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, উন্নয়ন কর্মীরা।

Related posts

‘মানুষের মস্তিষ্ক’ দিয়ে ড্রোন তৈরি করছে চীনা দল!

Megh Bristy

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি,ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে চাকরি, বেতন ৮০,৮১৫, লাগবে না অভিজ্ঞতা

Asma Akter

দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে সিলেট নগরের অর্ধশতাধিক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি

Rishita Rupa

Leave a Comment