প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ডোমখালী উপকূলীয় বনাঞ্চল ও সমুদ্রসৈকত। সবুজের সমারোহ মিলে এক অপার সৌন্দর্যের নীলাভূমি। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষার জন্য’ ৮০ এর দশকে সাগরের কোলজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে হাজার হাজার একর ম্যানগ্রোভ বন।
এখানে আছে কেওড়া, বাইন, গড়ান, গেওয়া, সুন্দরীসহ নানা জাতের বৃক্ষ। যেদিকে চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। বাঁধের উত্তর ও পশ্চিমে বয়ে চলা দৃষ্টিনন্দন সমুদ্রসৈকত।
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা পশ্চিম দক্ষিণে অবস্থিত ডোমখালী সমুদ্রসৈকতে বেড়িবাঁধ সড়কে চোখে পড়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণপিপাসুদের ঢল। শোনা যায়, সমুদ্রের গর্জন, বনের মধ্যে পাখিদের কলকাকলীর শব্দ। দক্ষিণা নির্মল বাতাসে শীতল করে ক্লান্ত শরীর।
স্থানীয় নুরুল আনোয়ার জানান, খুব ভোরে ও সন্ধ্যাবেলায় ঘাস, লতাপাতা খাওয়ার জন্য বনভূমির বাইরে চরাঞ্চলে চলে আসে হরিণের দল। এছাড়া দিনের বেলায়ও বনের ভেতর প্রবেশ করলে হরিণের আনাগোনা লক্ষ করা যায়।
বনের মধ্যে খাবারের খোঁজে সারা দিন দল বেঁধে ছুটে বেড়ায় মহিষের পাল। ওই অঞ্চলের অনেক মানুষ বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
বনের ভেতর দিয়ে হাঁটার সময় দেখা যায়, কিছুদূর পর পর সাগরের সঙ্গে মিশে যাওয়া ছোট ছোট খালের অবিরাম বয়ে চলা। এ খালগুলো দিয়ে ভরা মৌসুমে জোয়ারের পানি বাঁধের কিনারে চলে আসে।
বনের শেষ প্রান্তে দেখা যায়, কাঁদামাটিতে ছোট ছোট গর্তে লাল কাঁকড়া ও সামুদ্রিক নানা জাতের মাছ মাথা তুলে বসে থাকা ও ছোটাছুটি করার অপরূপ দৃশ্য। মানুষের আনাগোনার শব্দ পেলেই পালিয়ে যায়।
সমুদ্র তীরে আছে চিংড়ি ঘের ও মাছ চাষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের কারণে ৪ কিলোমিটারের মতো নতুন চর জেগে উঠেছে। তাই ভ্রমণপিপাসুরা খুব কাছ থেকে উপভোগ করতে পারেন সাগরের নৈসর্গিক দৃশ্য।