ইসলাম ধর্ম

কুরআনের প্রথম বিধান মদ ও জুয়া প্রসঙ্গে

Pickynews24

মদ ও জুয়া নিয়ে ইসলামের প্রথম বিধান হলো তা মানুষের জন্য অপছন্দনীয়। ইসলামই একমাত্র ধর্ম যে, মদ ও জুয়াকে হারাম হিসেবে অকাট্য ঘোষণা প্রদান করেছে। আল্লাহ তাআলা মদ ও জুয়াকে মানুষের জন্য হারাম করেছেন। তবে কুরআনুল কারিমে সর্ব প্রথম মদ ও জুয়াকে অপছন্দনীয় বিষয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে মদ ও জুয়ার কুফল তুলে ধরে ধীরে ধীরে তা বিভিন্ন পর্যায় থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

মদ ও জুয়া মানুষের জন্য অপছন্দনীয় হিসেবে আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারিমে এ বিষয়টি এভাবে তুলে ধরেছেন-

                                                              (আয়াতের অনুবাদ)

Quran

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২১৯ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মদ ও জুয়ার কুফল এবং আল্লাহর পথে ব্যয়ের ব্যাপারে ইঙ্গিত দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন। যাতে করে মানুষ আল্লাহ বিধান সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছতে সক্ষম হয়।

এ আয়াত নাজিলের কারণ প্রসঙ্গে ইমাম আহমদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনায় হিজরত করেন, তখন সেখানকার অধিবাসীরা মদ পান করতো এবং জুয়া খেলায় অভ্যস্ত ছিল। এ দুটি বিষয় যখন তারা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট জানতে চাইলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাজিল করেন।

মদ ও জুয়া শব্দ দুটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। মদের অধীনে ওই সব নেশা জাতীয় দ্রব্য অন্তর্ভূক্ত; যা মস্তিষ্কের বিকৃত ঘটায়। এভাবে জুয়াও তার সব ধরন ও প্রকারকে অন্তর্ভূক্ত করে।

মদ ও জুয়া বর্তমান আধুনিক সভ্যতায় যেভাবে বৈধই নয়; বরং সভ্যতার বিশেষ অঙ্গ এবং সামাজিক আভিজাত্যের ধারক। ইসলামের আবির্ভাবের আগ থেকেই এভাবে প্রাচীন আরবদের মধ্যেও মদ ও জুয়া সভ্যতার পরিচায়ক ছিল। শুধু আরবেই নয় সমগ্র বিশ্ব সভ্যতায় মদ ও জুয়া মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করা হতো।

শুধুমাত্র ইসলামি শরীয়তেই মদ ও জুয়াকে হারাম ঘোষণা করে দুনিয়ার অদ্বিতীয় নিয়ম রচিত হয়েছে। আর মদ ও জুয়া হারাম হওয়ার ব্যাপারে এ আয়াতটি সর্ব প্রথম বিধান। পরবর্তীতে অন্য আয়াত দ্বারা মদ ও জুয়াকে অকাট্যভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।

এ আয়াতে মদ ও জুয়ার ব্যাপারে কেবল অপছন্দনীয়তা ও পাপের কথা প্রকাশ করা হয়েছে। যাতে করে পরবর্তীতে মদ ও জুয়া হারাম ঘোষণা করলে বিষয়টি মেনে নেয়ার জন্য মানুষের মন তা মেনে নিতে প্রস্তত থাকে।

এর পরে আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজে অংশ গ্রহণকে হারাম ঘোষণা করে নির্দেশ প্রদান করে বলেছেন, ‘তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের নিকটবর্তী হইও না।’ অতঃপর ধীরে ধীরে মদ ও জুয়াসহ এ ধরনের সব বিষয়গুলোকে পর্যায়ক্রমে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।

আয়াতের দ্বিতীয় অংশে আল্লাহ পথে কি পরিমাণ সম্পদ ব্যয় করবে , সে ব্যাপারে দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কুরআনের নির্দেশ হলো- নিজেদের প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পর যা উদ্বৃত্ত থাকে। তা আল্লাহ পথে ব্যয় করা যাবে। কারণ পরকালের ন্যায় দুনিয়ার জন্যও চিন্তা থাকা আবশ্যক।

নিজের ও পরিবারের ভরণ-পোষণও ইবাদাত। তাই পরিবারের সমূদয় ব্যয় নির্বাহের অবশিষ্ট অর্থ আল্লাহর পথে ব্যয়ের ব্যাপারে নির্দেশও এসেছে এ আয়াতে। এ বিষয়গুলো মানুষের চিন্তা-ভাবনার খোরাক।

পরিষেশে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে জীবন পরিচালনার জন্যই কুরআনুল কারিম নাজিল করেছেন। কুরআনের বিধানগুলো অধ্যয়নে নিজেদের জীবন পরিচালনা এগিয়ে আসাই মুমিন বান্দার একান্ত করণীয় কাজ। কুরআনের বিধান যথাযথ পালন ও বাস্তবায়ন করতে নিজেদের জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ ও প্রচেষ্টা করাই মুমিনের একমাত্র কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা সবাইকে কুরআন সুন্নাহর বিধান পালন এবং তা বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ ত্যাগ ও প্রচেষ্টার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related posts

নামাজের সময়সূচি: ১১ মে ২০২৪

Asma Akter

নবিজি (সাঃ), কবরের ওপর বাড়ি নির্মাণ করতে নিষেধ করেছেন

Asma Akter

মূল্যায়ন করুন সুস্থতা ও অবসরের

Asma Akter

Leave a Comment