অর্থ-বাণিজ্যবাংলাদেশেসর্বশেষ

২৫ হাজার টাকা ন্যূনতম বেতন করার দাবি পোশাক শ্রমিকদের

Pickynews24

পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম বেতন ২৫ হাজার টাকা চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।

পোশাক শ্রমিকরা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের উচ্চমূল্যের কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে আছে। এমন সময় বেতন-ভাতা বাড়ানোর নামে পোশাক খাতের শ্রমিকদের মাসের পর মাস ঘুরানো চরম অমানবিক।

এক যৌথ বিবৃতিতে ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান গভীর উদ্বেগের সঙ্গে বলেন, নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠনের চার মাসের অধিক সময় অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ মজুরি প্রস্তাবনা দেয়নি। তারা স্পষ্টত্ব সময়ক্ষেপণ করছে। অথচ শ্রমিকরা চলমান মূল্যস্ফীতিতে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করছে।

নেতৃদ্বয় বলেন, প্রতিদিন জীবনযাত্রার ব্যয় হু হু করে বাড়ছে। করোনা পরবর্তী সময়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা যৌক্তিক হলেও তা করা হয়নি। স্বল্প বেতন-ভাতার সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি শ্রমিকদের জীবনে চরম দুর্দিন ডেকে এনেছে। দেশের অধিকাংশ শ্রমিক সংগঠন বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য বারংবার আহ্বান করলেও মালিকপক্ষ কার্যত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

অন্যদিকে সরকারও শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণে এগিয়ে আসেনি। বরং তারা নীরব থেকে মালিকদের সমর্থন দিয়ে গেছে। সরকারের আর্শীবাদপুষ্ট মালিকরা অর্থ-সম্পদে বিত্তশালী হলেও শ্রমিকরা হয়েছে নিঃস্ব।

তৈরি খাতের পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় হলেও শ্রমিকদের বেতন-ভাতা প্রদানে শীর্ষ দশে নেই। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর শ্রমিকদের তুলনায় দেশের শ্রমিকরা অনেক কম বেতন-ভাতা পেয়ে থাকে। বিদেশী ক্রেতা ও বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শ্রমিকদের বেতন দেখে অবাক বিস্ময়ে বিস্মিত হয়ে গিয়েছে। তারাও এই খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছেও চিঠি দিয়ে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। বিদেশীরা স্বল্প আয়ের শ্রমিকদের দুর্দিন উপলব্ধি করলেও মালিকপক্ষ-সরকার করতে ব্যর্থ হয়েছে।

পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থায় ২৫ হাজার টাকা বেতন-ভাতা কোনোভাবেই অযৌক্তিক না। বর্তমান বাজারে ৪ সদস্যের একটি পরিবারের মাসিক ব্যয় প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির মূল্যবৃদ্ধি এবং অস্বাভাবিকভাবে বাড়ি ভাড়া বাড়ছে। মালিকরা বেতন না বাড়ানোর জন্য নানা ইস্যুর অজুহাত দেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো যখন বিরূপ পরিস্থিতি ছিলো না তখন তারা স্বেচ্ছায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেননি। বরং দিনের পর দিন শ্রমিকদের ঠকিয়ে গেছেন। শ্রমিকরা মালিকদের বা এই খাতের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চান না। তাই বলে বছরের পর বছর শ্রমিকরা ঠকে যাবে। আর মালিকদের অর্থবিত্ত ফুলে ফেঁপে ওঠবে; এটাও প্রত্যাশা করা ঠিক না।

পণ্যের উৎপাদন তখনই বাড়বে যখন শ্রমিকরা সন্তুষ্ট মনে কাজ করতে পারবে। শ্রমিক-মালিক পরস্পর শত্রু না। তারা একে অপরের পরিপূরক। পোশাক শিল্পের আজকের উন্নতির পেছনে রয়েছে শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রম। শ্রমিকরা সব সময় মুখ খুলতে পারে না। পেটের দায়ে সব নীরবে সহ্য করে যায়। কিন্তু আজ তাদের পেট দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন তাদের পক্ষে নীরব থাকা সম্ভব না। সরকার ও মালিকপক্ষ মনে করছে আসন্ন নির্বাচনের আগে যৎ সামান্য মজুরি বৃদ্ধি করে শ্রমিকদের খুশি করে দিবে। আমরা স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিচ্ছি, নামকাওয়াস্তে বেতন বৃদ্ধিতে শ্রমিকরা সন্তুষ্ট হবে না। বরং এতে শ্রমিকদের দীর্ঘ দিনের জমে থাকা ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটবে। শ্রমিকরা ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য রাজপথে নেমে আসবে। যা সরকার ও মালিকপক্ষের জন্য সুখকর হবে না।

Related posts

নতুন রূপে আসছে বিলাসবহুল গাড়ি মার্সিডিজ বেঞ্জ জিএলএস

Suborna Islam

কীবোর্ডে স্পেসবার কেন বড় হয়?

Megh Bristy

আজ আন্তর্জাতিক পৃথিবী দিবস!

Megh Bristy

Leave a Comment