ঢাকার খবরবাংলাদেশেসর্বশেষসারাদেশ

ইন্টারনেট পুরো ঠিক হয়নি, সেবাদাতারা ভবনে ঢুকে পরিস্থিতি বুঝতে চান

মহাখালীর বহুতল ভবন খাজা টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবায় যে বিঘ্ন ঘটেছিল, তা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।

ইন্টারনেট সেবাদাতারা বলছেন, ভবনটিতে প্রবেশ করে ডেটা সেন্টার চালু করতে পারলে ইন্টারনেট সেবা দ্রুতই মোটামুটি স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে। কিন্তু তাঁদের ভবনটিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

মহাখালীর খাজা টাওয়ারে বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে আগুন লাগে। এতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে আগুন পুরোপুরি নিভে যায়। ভবনটিতে শীর্ষস্থানীয় কিছু ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠানের ডেটা সেন্টার রয়েছে, যার মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হয়।আজ শুক্রবার ভবনে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ঘটনাস্থালে যান। পরিস্থিতি দেখে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঞা। তিনি বলেন, ইন্টারনেট সেবাদাতাদের কোনো সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা নয়। কারণ, সেগুলো সুরক্ষিত থাকে। তবে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র এখনো জানা যায়নি।

নাজমুল করিম বলেন, নিরাপত্তার কারণে ভবনে প্রবেশের অনুমতি না পাওয়ায় ডেটা সেন্টার চালু করা যাচ্ছে না। অন্তত একটা ডেটা সেন্টার চালু করা গেলে ইন্টারনেট আজই আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তিনি বলেন, জেনারেটর দিয়ে এখনো ডেটা সেন্টার চালু করা সম্ভব। তবে এ জন্য তাঁদের ভবনে প্রবেশ করতে হবে।

ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান লিংক থ্রি টেকনোলজিসের কার্যালয় খাজা টাওয়ারে। প্রতিষ্ঠানটির কারিগরি দলে কাজ করেন জানিয়ে আশফাকুল আলম নামের এক কর্মকর্তা বলেন, ভবনের ভেতরে যাওয়া যাচ্ছে না—ধোঁয়া, গন্ধ। সবকিছু ঠিক করতে হয়তো দু-তিন দিন লাগবে। তিনি দাবি করেন, আগুনে ডেটা সেন্টারগুলোর কোনো ক্ষতি হয়নি।

খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর ইন্টারনেট সেবার পাশাপাশি মোবাইল নেটওয়ার্কেও বিঘ্ন দেখা দেয়। তখন অপারেটরদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভবনটিতে একটি ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) রয়েছে, যার মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবায় আন্তসংযোগ দেওয়া হয়। সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মুঠোফোনে কথা বলার ক্ষেত্রেও বিঘ্ন ঘটে।

ইন্টারনেট সেবাদাতারা বলছেন, খাজা টাওয়ারে গুগল ও ফেসবুকের ‘ক্যাশ সার্ভার’ রয়েছে।

ইন্টারনেটের ব্যবহার পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কেন্টিকের বিশ্লেষক পরিচালক ডাগ ম্যাডোরি একটি লেখায় বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। সেখানে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার পর থেকে ইন্টারনেট ট্রাফিক অর্ধেকের নিচে নেমে যায়।

আইএসপিএবির তথ্যানুযায়ী, খাজা টাওয়ারের আগুনে দেশের ৪০ শতাংশ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহকের সেবায় বিঘ্ন ঘটেছে, যার বেশির ভাগই ঢাকার বাইরের। ঢাকার পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেছে।

আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, আজ যদি ভবনে প্রবেশ করে কিছু কাজ করা যায়, তাহলে রাতের মধ্যেই পরিস্থিতি সহনীয় অবস্থায় আনা যাবে। তিনি আরও বলেন, আইআইজি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আইএসপিরা ব্যান্ডউইথ নেয়। দেশে শীর্ষস্থানীয় আইএসপি যাদের কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ নেয়, তাদের ১০-১২টির ডেটা সেন্টার খাজা টাওয়ারে।

ইমদাদুল হক আরও বলেন, খাজা টাওয়ারের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল। তবে অন্যদের সচেতনতা কতটা ছিল, সেটা দেখার বিষয়।

Related posts

বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড পেলো ওয়ালটন ফ্রিজ ও টিভি

Suborna Islam

ভালোবাসা দিবসের প্রচলিত ইতিহাস

Asma Akter

আজকের নামাজের সময়সূচি: ৮ এপ্রিল ২০২৪

Asma Akter

Leave a Comment