ডলার সংকটের শিকার হচ্ছে আমজনতা। দৃশ্যত এটি ব্যবসা-বাণিজ্যের সমস্যা হলেও আখেরে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ব্যাংকিং খাতের চেয়ে খোলাবাজারের ১৫-১৬ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ডলার। তারপরও বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত হারের চেয়ে খোলাবাজারে ১৫-১৬ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি হওয়ায় মূল্যস্ফীতিতে মদদ জোগাচ্ছে। গম, চিনি, ভোজ্য তেল, ডাল, পিঁয়াজসহ ভোগ্যপণ্যের এক বড় অংশ আমদানিনির্ভর। অথচ ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানির জন্য ব্যাংকে গিয়ে চাহিদামতো ডলার পাচ্ছেন না। একেক ব্যাংক একেক দামে ডলার বিক্রি করছে। পরিণতিতে আমদানি পণ্যের খরচ বাড়ছে। বাড়ছে শিল্পের উৎপাদন খরচ। বাংলাদেশে ডলার বা বৈদেশিক মুদ্রার সংকট হওয়ার কথা নয়। দেশের রপ্তানি আয় ক্রমেই বাড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রার আরেকটি প্রধান উৎস জনশক্তি রপ্তানিও বাড়ছে। ফলে কোনো যুক্তিতেই ডলার সংকট হওয়ার কথা নয়। কিন্তু প্রবাসীরা হুন্ডির মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানোর ফলে সংকট দেখা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাংক নির্ধারিত ডলারের দাম খোলাবাজারে বাড়তি চাহিদা তৈরিতে সহায়তা করছে। খোলাবাজারে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যখন ডলারপ্রতি ১২৭ টাকা পান, তখন তারা ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানো থেকে বিরত থাকেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর ৯ লাখ ৮৯ হাজার ৬৮৫ শ্রমিক কাজ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছেন। ২০২২ সালের একই সময়ে বিদেশে যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৭৪ হাজার ৭৩৯ জন। ২০২২ সাল থেকে বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর রেকর্ড সৃষ্টি হলেও প্রবাসী আয় কমছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদও কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৪১ মাসের মধ্যে সেপ্টেম্বরে সর্বনিম্ন ১৩৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। সোজা কথায় ডলার সংকট মোচনে প্রবাসী আয় যাতে ব্যাংকিং খাতে দেশে আসে তা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য বাড়তি নজরদারির কথা ভাবা যেতে পারে।
previous post
Related posts
- Comments
- Facebook comments