আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

গাজায় যুদ্ধবিরতি কবে, জানা যাবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি কবে থেকে শুরু হবে— তা জানা যাবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই। বুধবার এক সরকারি বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে চলমান যুদ্ধের অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার।

বিবৃতিতে কাতারের সরকার জানিয়েছে, ‘প্রস্তাবিত ৪ দিনের যুদ্ধবিরতির আওতায় নিজেদের জিম্মায় থাকা ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মধ্যে ৫০ জন নারী ও শিশুকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১৫০ জন নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্ককে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।’

‘যুদ্ধবিরতির সময় গাজা উপত্যকায় খাদ্য, চিকিৎসা সামগ্রী, জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।’

‘গাজায় কবে থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে— তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। ইসরায়েলের সরকার জানিয়েছে তারা সব জিম্মিকে মুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা আরও জানিছে ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পর প্রতি ১০ জন জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ১ দিন বাড়াতে রাজি আছে ইসরায়েল।’

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলার পর গত সপ্তাহে কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থতার ভিত্তিতে ইসরায়েলের কাছে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল কাতারে অবস্থানরত হামাসের হাইকমান্ড। প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, যদি ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি, কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি, উপত্যকায় ত্রাণপণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ এবং আহত বেসামরিকদের উপত্যকার বাইরে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণের অনুমতি দেয়— তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে ৫০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস।

ইসরায়েল প্রথমে এই প্রস্তাব মানতে চায়নি, তবে সেখানকার জনগণ ও জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের চাপে মঙ্গলবার এক জরুরি বৈঠকে প্রস্তাবে সায় দিয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। তবে বৈঠক শেষে এক বক্তৃতায় নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি এবং যতদিন আমাদের লক্ষ্য পূরণ না হয়, ততদিন এই যুদ্ধ চলবে।’

হামাসও অবশ্য একই বিবৃতি দিয়েছে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, ‘যুদ্ধবিরতি শেষে আমাদের আঙুল থাকবে বন্দুকের ট্রিগারে।’

গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলে প্রবেশ করে নির্বিচারে সামরিক-বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করে তারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।

হামাসের এই হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। ১৬ অক্টোবর থেকে সেই অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৪ হাজার। আর গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন।

যুদ্ধের শুরুর দিকে হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছিল, তাদের জিম্মায় প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলি রয়েছে। তবে পরে হামাস ঘোষণা করে, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার কারণে নিহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন জিম্মি।

এই যুদ্ধের শুরু থেকেই হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতা ও দূতের ভূমিকা পালন করে আসছে কাতার ও মিসর।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ

Related posts

মৌমাছি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে

Rubaiya Tasnim

নামাজের সময়সূচি: ৩ মার্চ ২০২৪

Asma Akter

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে চায় ব্রিটেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন

Megh Bristy

Leave a Comment