প্রতারণা আর জালিয়াতির অভিযোগে রমরমা ইভ্যালির ধ্বস নামে ২০২১ সালে। ওই বছর চেক জালিয়াতি ও অন্যান্য প্রতারণার দায়ে সারাদেশে ৩৫০ এর অধিক মামলা হয়েছিল রাসেল, তার স্ত্রী শামীমা নাসরিন ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। এই উদ্যোক্তা দম্পতি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন র্যাবের হাতে।
সম্প্রতি কারামুক্ত হয়েছেন রাসেল। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যবসা শুরু করে চরম সফলতায় পৌঁছে আড়াই বছরের মাথায় খেই হারান রাসেল। এখন তিনি দুই বছর নির্বিঘ্নে ব্যবসা করে ইভ্যালি দায় পরিশোধ করতে চান। এছাড়া পড়ে যাওয়া ইভ্যালিকে টেনে তুলতে চান আগের জায়গায়। বিশাল মূল্যছাড়ের কৌশল এড়িয়ে ক্যাশ অন ডেলিভারিতে এখন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিকে পরিচালনা করতে চান প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) অনলাইন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে রাসেলের এসব পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
রাসেল বলেন, দুই বছর নির্বিঘ্নে পরিকল্পনা মাফিক ব্যবসা করতে পারলে ইভ্যালি দায় পরিশোধের পর্যায়ে পৌঁছাবে। সেক্ষেত্রে বড় বিনিয়োগ পাওয়ার একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে এবং সেই বিনিয়োগ থেকে ব্যবসা সম্প্রসারণের পাশাপাশি দায়দেনাগুলোও পরিশোধ করা যাবে।
ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে লাভজনক আইডিয়া নিয়ে পৌঁছাতে পারলে ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় লাগবে না। মাসে ৫০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রির পর্যায়ে পৌঁছাতে পারলে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে হাঁটা যাবে। এতে মাসে তিন কোটি টাকা মুনাফা করার একটা পথ তৈরি হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে আমরা আর লোকসান দিয়ে পণ্য বিক্রি করব না। এভাবে দুই বছর পাড়ি দিতে পারলেই নতুন বিনিয়োগ পাওয়া যাবে। বিনিয়োগ থেকেই গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ করতে হবে।
বন্ধ হওয়ার আগে ইভ্যালির ইউনিক কাস্টমার ছিল ৪২ লাখ। এখন আদালতের নির্দেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ই-ক্যাবের প্রতিনিধি ও রাসেলের পরিবারের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত পর্ষদের অধীনে ইভ্যালির ইউনিক গ্রাহক রয়েছেন ২ লাখ ৭৪ হাজার। বর্তমানে ১২০ জন লোকবল নিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটির দায় কত তা নিয়ে নির্দিষ্ট তথ্য নেই। ২০২১ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ৫৪৩ কোটি টাকার দায়ের কথা জানিয়েছিলেন রাসেল। পরে বিভিন্ন সংস্থার বরাতে জানা যায়, দায় হাজার কোটি টাকারও বেশি।
রাসেল গ্রেপ্তার হওয়ার এক মাসের মধ্যে ইভ্যালির প্রধান সার্ভারটিও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দায়দেনার হিসাব আর সামনে এগানো যায়নি।
কারামুক্তির পর দায়দেনা নিয়ে রাসেল বলেন, “বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এক হাজার কোটি টাকার দায়দেনার যে তথ্য হাজির করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। সর্বমোট দায় ৭০০ কোটি টাকার কিছু বেশি। আমি গ্রেপ্তার হওয়ার পর হোস্টিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের কাছে ৭ কোটি টাকা দায় পড়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তারা সার্ভার স্থগিত করে দিয়েছে। এখন আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে সেই সার্ভার আবার সক্রিয় করা যাবে বলে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে মনে হচ্ছে।