তোমরা কিভাবে আল্লাহকে অস্বীকার করো? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন মৃত; তিনিই তোমাদেরকে জীবন দিয়েছেন। পুনরায় তিনি তোমাদের মৃত্যু দেবেন এবং আবার তিনিই তোমাদেরকে জীবিত করবেন। এভাবে, শেষ পর্যন্ত তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে। (২৯) তিনিই সেই মহান সত্তা, যিনি তোমাদের জন্যই সৃষ্টি করেছেন পৃথিবীর সবকিছু। তারপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন এবং সেগুলোকে বিন্যস্ত করেন সাত আসমানে। বস্তুত, তিনি সববিষয়ে সবিশেষ অবগত। (সূরা বাকারাহ : ২৮-২৯)
মর্ম ও শিক্ষা
ইতঃপূর্বে স্রষ্টা আল্লাহর একত্ববাদ, আল্লাহর কিতাব কুরআন, নবুয়ত, আখিরাতের বর্ণনা এবং তারপর ইবাদতের আহ্বান জানানোর পর এখানে বিস্ময় প্রকাশ করা হচ্ছে যে, এত কিছুর পরও কিভাবে মানুষ পরম করুণাময় ও মহাপরাক্রমশালী আল্লাহকে অস্বীকার করতে পারে এবং তার প্রতি অকৃতজ্ঞতার আচরণ করতে পারে? অথচ আল্লাহই মানুষকে জীবন দান করেছেন, তারই জন্য পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং সর্বশেষে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করে কর্মফল ভোগ করার জন্য মানুষকে পুনর্জীবিত করবেন। এ অবস্থায় আল্লাহর অবাধ্য হওয়া কিভাবে সম্ভব?
কুফরি ও অকৃতজ্ঞতা অনাকাক্সিক্ষত, অবাঞ্ছিত ও অস্বাভাবিক আচরণ : আয়াতে বলা হয়েছে, তোমরা কিভাবে আল্লাহকে অস্বীকার করো অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন মৃত? (আয়াত-২৮) মানুষের তার প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালাকে অস্বীকার করা ও তাঁর প্রতি অকৃতজ্ঞ হওয়ায় এখানে আল্লাহ তায়ালা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ও কঠোর সমালোচনা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে এ মহাকুদরতের আধার সর্বজ্ঞ ও বিচার দিনের মালিক সর্বশক্তিমান আল্লাহর সামনে আনুগত্যের মাথা নত করে তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করাই যৌক্তিক এবং প্রতিটি মানুষের কর্তব্য। অথচ অনেকেই তাঁকে অস্বীকার করে, তাঁর অবাধ্য হয়। এরূপ আচরণ সত্যিই অনাকাক্সিক্ষত ও অবাঞ্ছিত। যে আল্লাহ মানুষকে জীবন দান করেছেন, যে মানুষকে উদ্দেশ করেই পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, যাঁর কাছে সব কর্মের হিসাব দিতে হবে, সে আল্লাহর অবমাননা করা ও অবাধ্য হওয়া কিভাবে সম্ভব? তা হবে চরম বিস্ময়ের ব্যাপার। এরূপ আচরণ মানবসুলভ আচরণের পরিপন্থী। সুতরাং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হয়ে তাঁর বিধিবিধান শিরোধার্য করে নেয়াই শোভনীয় আচরণ।