সূর্য পূর্ব দিকে ওঠে আর পশ্চিম দিকে অস্ত যায়, একথা সবারই জানা। তবে আসল ঘটনা হলো, সূর্য ওঠে না বরং পৃথিবীই নিজের অদৃশ্য মেরুদণ্ডে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরতে থাকে বলেই কখনো সূর্যের আলো তার গায়ে লাগে। আবার কখনো লাগে না। সূর্যের আলো পড়লেই দিন, আর আলো নিভে গেলে
তবে কোন দেশে প্রথম দিন হয় জানেন? দেশটি হলো জাপান। সূর্যের প্রথম কিরণ নাকি পড়ে এই ছোট্টো দেশটিতেই। এ কারণে সে দেশের নাম নিপ্পন। যার অর্থ, সূর্যোদয়ের দেশ।
আর ভারতে প্রথম সূর্যোদয় হয় অরুণাচল প্রদেশে। উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যের বেদং উপত্যকার ডং গ্রামে প্রথম আলো ফেলে সূর্য।
সূর্যের প্রথম রশ্মি পৃথিবী স্পর্শ করে রাত ৩ টায়। ১৯৯৯ সালে, ডং গ্রাম ভারতের উদীয়মান সূর্যের ভূমির মর্যাদা পায়। সেখানে সূর্যের প্রথম রশ্মি পৃথিবী স্পর্শ করে রাত ৩ টায়।
শুনতে রোমাঞ্চকর মনে হলেও সূর্যোদয়ের সেই দৃশ্য দেখাও কিন্তু দারুণ রোমাঞ্চকর। নিজের চোখে সে দৃশ্য না দেখলে বুঝি জীবন বৃথা।
জানলে অবাক হবেন, নতুন বছরে অনেক পর্যটকই সূর্যোদয়ের এই গ্রামে যান বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখতে। অনেকেরই ধারণা এতে সারা বছর ভালো যাবে। আবার অনেকেই বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখে জীবনী শক্তি অর্জন করতে চান।
এই গ্রামে যেমন সকাল সকাল সূর্য ওঠে, তেমনই রাতও হয় দ্রুত হয়। মজার কথা হলো, বিকেল ৪টা বাজতে না বাজতেই সে গ্রামের বাসিন্দারা রাতের খাবারের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। কারণ সেখানে ৪ টায় অন্ধকার হতে শুরু করে।
ভোর ৩ টায় সেখানে সূর্যের লাল আভা দেখা যায় বলে সেটাই তাদের কাছে ভোরবেলা। এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে এই স্থান ভ্রমণের সেরা সময়।
ডং গ্রাম অর্থাৎ বেদাং উপত্যকায় দিন প্রায় ১২ ঘণ্টা। গ্রামটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২৪০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। লোহিত ও সতী এই দুটি এখানকার প্রধান নদী। এই গ্রামের লোকসংখ্যা মোট মাত্র ৩৫ জন। সেখানে আছে প্রাকৃতিক উষ্ণ প্রস্রবণ।
১৯৯৯ সালের আগে লোকজন বিশ্বাস করতেন, সূর্যের প্রথম রশ্মি নাকি আন্দামানের কুচ্ছল দ্বীপে পড়ে। কিন্তু পরে জানা যায়, সূর্যোদয়ের গ্রামটি আসলে অরুণাচল প্রদেশে অবস্থিত ডং গ্রাম। এই তথ্য প্রকাশের পর থেকেই সেখানে পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে।
- কীভাবে যাবেন ডং গ্রামে বা বেদং উপত্যকায়?
- বিমানে
কেউ যদি ফ্লাইটে যেতে চান তাহলে ভারতের ডিব্রুগড় বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হবে। সেখান থেকে ডং ভ্যালি ৩৪৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বাস বা ক্যাবে করে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন।
- ট্রেনে
ডং গ্রামের নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশনটি হলো তিনসুকিয়া রেলওয়ে স্টেশন। সেখান থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ডং ভ্যালি। এখান থেকে আপনি তেজু পৌঁছানোর জন্য একটি ট্যাক্সি ভাড়া করতে পারেন।
- বাস বা গাড়ির মাধ্যমে
এনএইচ ৫২ রোড দিয়ে তেজু অরুণাচলের সমস্ত প্রধান শহরের সঙ্গে ভালোভাবে সংযুক্ত। তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড় ও গুয়াহাটি থেকে তেজুর জন্য অনেক বাস পাওয়া যায়।