বাংলাদেশে

মহিলা নেত্রীকে খাটের সঙ্গে বেঁধে সারারাত নির্যাতন

মহিলা নেত্রীকে খাটের সঙ্গে বেঁধে সারারাত নির্যাতন

সারারাত খাটের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফেরদৌসী বেগম। এলাকার এক ভাইয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ তুলে তাঁর বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় স্থানীয়রা। এ সময় দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে ঘরের আসবাব ভাঙচুরসহ স্বর্ণের আংটি ও কানের দুল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

গত ২৯ জানুয়ারি রাঙ্গালিয়াতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরদিন ৩০ জানুয়ারি নারীর স্বামী আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ পাঁচ-সাতজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদশা নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. হাসিবুল্লাহ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আহত ফেরদৌসী বেগম সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচন করে পরাজিত হন। তিনি বাগবাটি ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।
মামলার আসামিরা হলেন—সদর উপজেলার রাঙ্গালিয়াগাতী গ্রামের শাকিল (২৮), একই গ্রামের মো. অনিক (২৭), হযরত আলী (৩৫), মো. শাকিল (২২), মো. ইব্রাহীম (২৪), মো. মনির (২৫), মো. হান্নান (২২), নুরে আলম (৩০), বাদশা (৩৫) ও ইয়াকুব আলী (৪৫)।
মামলার বাদী মো. আনোয়ার হোসেন (৪৬) ও ফেরদৌসী বেগম দম্পতির এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। আনোয়ার হোসেন নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার নারায়ণ জুটমিলে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন। তাঁদের ছেলে যাত্রাবাড়ীতে একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। আর মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থাকেন।
মামলার এজাহার সূত্র জানায়, ফেরদৌসী বেগম গ্রামের বাড়ি রাঙ্গালিয়াতে একাই বাস করেন। মো. রাসেল নামের এলাকার এক ভাই তাঁদের বাড়িতে যাতায়াত করার কারণে উল্লিখিত আসামিরা বিভিন্ন রকম কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে আসছেন। গত ২৯ জানুয়ারি রাসেল বাড়িতে এলে ফেরদৌসী তাঁকে আপ্যায়ন করার সময় আসামিরা বাড়িতে প্রবেশ করেন। এ সময় মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক আছে দাবি করে ফেরদৌসী ও রাসেলকে মারধর শুরু করেন। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ফেরদৌসীকে রশি দিয়ে খাটের সঙ্গে বেঁধে সারা রাত নির্যাতন এবং শরীরের কাপড় টানাহেঁচড়া করেন। এতে ফেরদৌসী আহত হন।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দাবি করা চাঁদার টাকা না পেয়ে ঘরের আসবাব ভাঙচুর করেন। ঘরে থাকা ছয় আনা ওজনের এক জোড়া কানের দুল, তিন আনা ওজনের একটি আংটি নিয়ে যান তাঁরা। সকালে স্থানীয় এক ব্যক্তি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ বাড়ি গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যান। পরে ফেরদৌসী ও রাসেলকে সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
খবর পেয়ে আনোয়ার হোসেন বাড়ি এসে বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ১ ফেব্রুয়ারি রাতে পুলিশ মামলার আসামি বাদশাকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার আসামি বাদশার বাবা ফরজ আলী বলেন, মহিলার স্বামী বাড়ি থাকে না। এলাকার ছেলেরা একই ঘরে দুজনকে দেখে আটক করে দু-একটা চড়থাপ্পড় মারে। পরে শুনি আমার ছেলেসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জ সদর থানার সাব-ইন্সপেক্টর ইয়ামিন সরকার জানান, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তখন নারীকে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়নি। তাঁরা দুজনে আহত ছিলেন। পরে তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কাগজপত্র নিয়ে মামলা করেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Related posts

ময়মনসিংহে ট্রাকে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ৪

Mehedi Hasan

মহাসড়কে শুকানো হচ্ছে খড় বিচালি,এতে করে পিছলে যাচ্ছে চাকা 

Rishita Rupa

বজ্রপাতে মারা গেছেন মসজিদের এক ইমাম।

Megh Bristy

Leave a Comment