বাংলাদেশেশিক্ষা

এমন সাতটি ভাষার বিষয়ে জানবো, যেগুলোর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি

pickynews24

ছোটবেলা থেকে আমরা শুনে আসছি, মনের ভাব প্রকাশের প্রধান মাধ্যম হলো ভাষা। কিন্তু পৃথিবীর একেক অঞ্চলের মানুষ একেক ভাষায় কথা বলার মাধ্যমে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামার ইন্সটিটিউট অফ লিঙ্গুইস্টিক্‌স (এসআইএল) ইন্টারন্যাশনাল-এ র ভাষা নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ‘এথনোলগ’ বলছে, পৃথিবীতে বর্তমানে সাত হাজার ১৬৮টি ভাষা আছে।

কিন্তু, এর ৪২ শতাংশ ভাষাই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ অবস্থায় আছে; অর্থাৎ, তিন হাজার ৪৫টি ভাষা এখন বিলুপ্তির পথে।

এর আগেও সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক ভাষা চিরতরে হারিয়ে গেছে।

তবে যেসব ভাষা পৃথিবীতে এখনও বহাল তবিয়তে টিকে আছে, সেগুলোর মাঝে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত ভাষা কোনগুলো, আমরা কী তা জানি? কিংবা, পৃথিবীতে কোন ভাষায় মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলে? এবং কোন কোন দেশে এসব ভাষা ব্যবহার করা হয়?

আজ আমরা এমন সাতটি ভাষার বিষয়ে জানবো, যেগুলোর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।পৃথিবীর বহুল ব্যবহৃত ভাষা হলো ইংলিশ।

  • ইংরেজি বা ইংলিশ

যদি বহুল ব্যবহৃত ভাষার কথা বলতে হয়, তবে নিঃসন্দেহে প্রথমেই সেখানে ইংলিশের নাম উঠে আসবে।

পৃথিবীতে খুব অল্প কয়েকটি দেশের মাতৃভাষা ইংরেজি, কিন্তু পৃথিবীতে এমন দেশ বিরল যেখানে মাতৃভাষার পর ইংলিশকে প্রাধান্য দেয়া হয় না।

এথনোলগ-এর তথ্য অনুযায়ী, ৮০০ কোটি মানুষের পৃথিবীতে প্রায় ১৫০ কোটি মানুষই ইংলিশে কথা বলে।

যদিও পৃথিবীর মাত্র ৩৮ কোটি মানুষের মাতৃভাষা ইংলিশ এবং মাতৃভাষাভাষীর সংখ্যার বিচারে এর অবস্থান বিশ্বে তৃতীয়।

এই ভাষার আঁতুড়ঘর হলো যুক্তরাজ্য, অর্থাৎ ইউনাইটেড কিংডম।

বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা না হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবী জুড়ে ইংলিশের এত বিস্তৃতির পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে কয়েকশো বছর ধরে পৃথিবীজুড়ে চলা ব্রিটিশ উপনিবেশবাদ।

ঐ সময় ব্রিটিশরা আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে তাদের উপনিবেশ স্থাপন করে। সাধারণত উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার পেছনে উদ্দেশ্য থাকে ঐ অঞ্চলে ওপর অর্থনৈতিক আধিপত্য তৈরি করা।

ভারতীয় উপমহাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলো থেকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অবসান ঘটলেও উপনিবেশবাদের প্রভাব রয়ে গেছে। ইংলিশের জনপ্রিয়তা হিসেবে এই প্রভাবকে উদাহরণ হিসেবে দেখা হয়।

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতনের পর সারাবিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র একক আধিপত্য বিস্তার করে। যুক্তরাষ্ট্রের মাতৃভাষাও ইংলিশ হওয়ায় মার্কিন সংস্কৃতির অংশ হিসেবেই সেটি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আরও প্রভাবশালী হয়ে উঠে।

এথনোলগ অনুযায়ী, পৃথিবীর মোট ১৪৬টি দেশে ইংলিশ ভাষাভাষী মানুষ পাওয়া যায়। এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক দেশ।

উল্লেখ্য, ইংলিশ বা ইংরেজি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের একটি ভাষা।বিশ্বব্যাপী ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে চীনা ভাষা।

  • ম্যান্ডারিন চাইনিজ

চীনের অধিকাংশ মানুষ কথা বলে ম্যান্ডারিন চাইনিজ ভাষায়। যদি শুধুমাত্র মাতৃভাষার কথা বিবেচনা করা হয়, তাহলে পৃথিবীতে ম্যান্ডারিন চাইনিজ ভাষাভাষীর সংখ্যাই সর্বোচ্চ।

এথনোলগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর ৯৪ কোটি মানুষের মাতৃভাষা ম্যান্ডারিন চাইনিজ।

এছাড়া, পৃথিবীর প্রায় ১১০ কোটি মানুষ ম্যান্ডারিন চাইনিজে কথা বলে। সেক্ষেত্রে, ইংলিশের পরেই এর অবস্থান।

ম্যান্ডারিন ভাষাভাষীর সংখ্যা এত বেশি হওয়ার কারণ, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ চীন। ওয়ার্ল্ড স্ট্যাটিসটিকস অব চায়না-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটির মোট জনসংখ্যা ১৪০ কোটির একটু বেশি।

এথনোলগ বলছে, চীনের ৮১ শতাংশ মানুষ ম্যান্ডারিন চাইনিজে কথা বলে। এছাড়া, কানাডা, মিয়ানমার, মঙ্গোলিয়া, ভিয়েতনাম, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ মোট ৩৭টি দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ম্যান্ডারিন ভাষাভাষী রয়েছে।

বলা হয়ে থাকে যে চীনে জন্ম নেয়া ম্যান্ডারিন চাইনিজ পৃথিবীর অন্যতম কঠিন ভাষা।

৫০০০ বছরের বিবর্তনে তৈরি এই ম্যান্ডারিন চাইনিজ সিনো-তিব্বতীয় ভাষা পরিবারের একটি ভাষা।বাংলার সাথে হিন্দির অনেক মিল রয়েছে।

  • হিন্দি

জনসংখ্যার দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে আছে হিন্দি ভাষাভাষীরা। এথনোলগ-এর তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর প্রায় ৬০ কোটি ৯০ লাখ মানুষ হিন্দিতে কথা বলে। এদের মাঝে ৩৫ কোটি মানুষের মাতৃভাষা হিন্দি।

হিন্দি ভাষাভাষী মানুষের বসবাস ভারতেই বেশি। তবে ১৪০ কোটি মানুষের দেশ ভারতে হিন্দি ছাড়াও আরও অনেক ভাষা আছে। সেই হিসেবে করলে, দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষের মাতৃভাষা হিন্দি।

ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দেশটির মোট ২২টি দাপ্তরিক ভাষার মাঝে হিন্দি অন্যতম।

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৪৯ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর ভারতে হিন্দিকে সরকারি ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল। বর্তমানে এ দিনটি হিন্দি দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

হিন্দির সাথে আরও কিছু ভাষার উচ্চারণগত মিল রয়েছে। যেমন, বাংলা, উর্দু, নেপালি, ভোজপুরি, রাজস্থানি ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের পর থেকে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি, অর্থাৎ বলিউড সিনেমার উত্থানও হিন্দি ভাষাকে বিশ্বব্যাপী নতুন করে পরিচয় করে দিয়েছে।১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০মাতৃভাষা হিসেবে স্প্যানিশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা।

  • স্প্যানিশ

পৃথিবীতে প্রায় ৫৬ কোটি মানুষ স্প্যানিশে কথা বলে। সে হিসেবে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ভাষা স্প্যানিশ।

মাতৃভাষা হিসেবে পৃথিবীর প্রায় ৪৯ কোটি মানুষ স্প্যানিশে কথা বলে। এদিক দিয়ে ম্যান্ডারিনের পরেই স্প্যানিশের অবস্থান। অর্থাৎ, মাতৃভাষা হিসেবে এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা।

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মেক্সিকোতে স্প্যানিশ ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এরপরই আছে কলম্বিয়া, আর্জেন্টিনা, যুক্তরাষ্ট্র ও স্পেন।

ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা-পরিবারের রোমান্স শাখার ভাষা স্প্যানিশ বর্তমানে মোট ১৮টি দেশের দাপ্তরিক ভাষা।

তবে স্প্যানিশ কিন্তু শুরুতেই এতটা বহুল ব্যবহৃত ভাষা ছিল না। ব্রিটেনের মতো স্পেনও এক সময় পৃথিবীর অনেক দেশকে নিজেদের কলোনি করে রাখে এবং পরবর্তীতে সেইসব কলোনিতে ভাষাটির প্রভাব রয়ে যায়। যার প্রায় সবগুলোই ল্যাটিন আমেরিকায়।

উল্লেখ্য, ইংলিশসহ মোট ছয়টি ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা বলা হয়। সেই ছয়টি ভাষার একটি স্প্যানিশ।ফ্রেঞ্চ জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা।

  • ফরাসি

ফরাসি বা ফ্রেঞ্চও জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক সংস্থা ইংরেজির পাশাপাশি ফ্রেঞ্চকে তাদের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ব্যবহার করে।

এথনোলগ অনুযায়ী, বর্তমান পৃথিবীতে ফ্রেঞ্চ বা ফরাসি ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যা ৩০ কোটির চেয়ে কিছুটা বেশি।

ব্রিটানিকা বলছে, বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে এর ব্যবহার আছে। এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো- ফ্রান্স এবং কানাডা। এর বাইরে রয়েছে আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ।

এছাড়া সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে প্রচুর ফ্রেঞ্চ ভাষাভাষী পাওয়া যায়।

স্প্যানিশের মতো ফ্রেঞ্চের বিস্তৃতির পেছনেও অন্যতম কারণ উপনিবেশবাদ।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের কলোনি বিস্তার করেছিলো ফ্রান্স, যার অধিকাংশই আফ্রিকা মহাদেশে। ‌এই কারণেও ফরাসি ভাষা মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে।পৃথিবীতে আরবি ভাষাভাষীর সংখ্যা ২৭ কোটির কিছুটা বেশি।

  • আরবি

এথনোলগের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীতে আরবি ভাষাভাষীর সংখ্যা ২৭ কোটির কিছুটা বেশি।

সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইনের মতো মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মানুষের মাতৃভাষা হচ্ছে আরবি।

আবার অনেক দেশের মাতৃভাষা না হলেও সেখানে ব্যাপক হারে আরবির প্রচলন রয়েছে।

বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় ৩০টি দেশের দাপ্তরিক ভাষা আরবি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আলজেরিয়া, মিশর, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, মরক্কো, ওমান, সৌদি আরব, সুদান, সিরিয়া ইত্যাদি।

ধর্মীয় কারণে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় অনেকে কম-বেশি আরবি লিখতে, পড়তে, বলতে জানেন।

সেমেটিক ভাষা পরিবারের বৃহত্তম ভাষা এই আরবি জাতিসংঘের অন্যতম একটি দাপ্তরিক ভাষাও।

আরবি ভাষার সাথে অন্যান্য ভাষার একটি বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। আরবি লিপি লেখা হয় ডান থেকে বামে।১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।

  • বাংলা

এথনোলগ অনুযায়ী, বর্তমান পৃথিবীতে বাংলা ভাষাভাষীর সংখ্যা ২৭ কোটির কিছুটা বেশি।

পৃথিবীর বহুল ব্যবহৃত ভাষাগুলোর মাঝে বাংলা সপ্তম। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বাংলা ভাষাভাষী মানুষ বসবাস করে বাংলাদেশে এবং এরপর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে।

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ ভাগের আগে থেকেই ভাষা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিলো।

১৯৪৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার নির্দেশ দেয় এবং পাকিস্তান সরকারের এমন ঘোষণার বিরোধিতা করে বর্তমান বাংলাদেশের জনগণ।

তৎকালীন পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশে এই নিয়ে আন্দোলন চলতে থাকে। সেটি সংঘাতে রূপ নেয় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।

সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীরা মিলে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।

কিন্তু সেই মিছিল যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি যায়, তখন পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। সেই গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ আরও অনেকে শহীদ হন।

তবে ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর কারণে সেদিন সারাদেশে বিদ্রোহ শুরু হয়।

ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত ১৯৫৪ সালের ৭ মে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা তৎকালীন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গৃহীত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর বাংলাকে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করা হয়।

সবশেষে, বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য আন্দোলন এবং ভাষার অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।

Related posts

চট্টগ্রামে মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের ১০৭ ছাত্রী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত

Rishita Rupa

চালু হলো আগারগাও থেকে মতিঝিল মেট্রোরেল।

Samar Khan

হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে একবছর পড়াশোনা করাবেন আমেরিকার ইয়েস প্রোগ্রাম

Rubaiya Tasnim

Leave a Comment