কৃষি

পোল্ট্রি খামারে খাগড়াছড়ির আজিজুল প্রথম বছরে পান সফলতা

pickynews24

২০১২ সালে ১ হাজার মুরগির শেড দিয়ে পোল্ট্রি খামার শুরু করেন মো. আজিজুল ইসলাম। প্রথম বছরে পান সফলতা। পোল্ট্রি খামারে আজিজুল ইসলামের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই ব্যবসা শুরু করেন। এ গ্রামের পোল্ট্রি খামারিরা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছেন। বর্তমানে ওই গ্রামের সবার আয়ের একমাত্র উৎস পোল্ট্রি খামার।

বলছিলাম খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার বেলছড়ি ইউনিয়নের পিছিয়ে পড়া গ্রাম স্বর্ণকারটিলার বদলে যাওয়ার গল্প। এক যুগের ব্যবধানে পোল্ট্রি খামারে ভাগ্য বদলে গেছে শতাধিক পরিবারের। পোল্ট্রি খামারের আয়ে ছনের ঘরের বদলে গড়ে উঠছে পাকা বাড়ি।

আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গড়ে উঠেছে পোল্ট্রি খামার। পোল্ট্রি খামার গড়ে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। গ্রামের প্রতিটি বাড়িই যেন পোল্ট্রি খামার। এসব খামারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

মাটিরাঙ্গায় উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের বেলছড়ি ইউনিয়নের স্বর্ণকারটিলা গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার দু’ধারে বাড়ির আঙিনা বা পাহাড়ের পাদদেশে ছোট-বড় পোল্ট্রি খামার। ২ হাজার থেকে শুরু করে ৪ হাজার মুরগির শেড রয়েছে বিভিন্ন খামারে।

১৩০ পরিবার নিয়ে গঠিত স্বর্ণকারটিলা গ্রামে ছোট-বড় ১৮০টি পোল্ট্রি খামার আছে। প্রতি মাসে গড়ে ৪ লাখ মুরগি উৎপাদন হয়। প্রতি মাসে ১ গ্রাম থেকে ১০ কোটি ১৫ লাখ টাকার মুরগি বিক্রি হয়। বছরে যা দাঁড়ায় ১২১ কোটি ৮০ লাখ টাকায়। পাহাড়ি গ্রামের এসব মুরগি খাগড়াছড়ি জেলার চাহিদা মিটিয়ে ফেনী, নেয়াখালী, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বিক্রি করা হয়। প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয় গ্রামের বিভিন্ন খামারে।

তবে শত কোটি টাকার উপরে পোল্ট্রি মুরগি উৎপাদন হলেও ভালো নেই খামারিরা। বিদ্যুৎ সংকট, অতিরিক্ত টোল আদায়, মুরগির বাচ্চা, খাদ্য ও ভ্যাকসিনের মূল্য বৃদ্ধিতে হতাশার কথা জানিয়েছেন খামারিরা। তারা বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে আমরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও আমাদের খবর কেউ রাখে না।’

হতাশার কথা জানিয়ে খামারি আসমাউল ইসলাম বলেন, ‘বাচ্চা, খাদ্য ও ভ্যাকসিনের দাম বাড়লেও মাংসের দাম আগে যা ছিল এখনো তা-ই আছে। চাইলেও এ ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই। সব মিলিয়ে এখানকার খামারিরা দুর্ভোগের মধ্যে আছে।’

অপর খামারি ইয়াসির আরাফাত বিদ্যুৎ না থাকায় নিজেদের ভোগান্তির কথা জানিয়ে বলেন, ‘পোল্ট্রি খামার করতে বিদ্যুৎ খুব গুরুত্বপূর্ণ হলেও আমাদের গ্রামে তা নেই।’

২০১২ সাল থেকে পোল্ট্রি খামার ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে মুরগির জন্য কয়েক জায়গায় টোল দিতে হয়। পাশাপাশি ফিড, বাচ্চার মূল্য বৃদ্ধিসহ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে পথে বসতে হবে।’

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চক্রবর্তী বলেন, ‘পোল্ট্রি খামারের মাধ্যমে বদলে যাওয়া ওই গ্রামে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। পোল্ট্রি খামারিদের সঙ্গে কথা বলে সব ধরনের সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Related posts

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে লেবু চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অধীর চন্দ্র রায়।

Asma Akter

লাভবান কৃষক,মিরসরাইয়ে বরবটি চাষে

Asma Akter

শিশুর জন্য দুধ-‘সাবুদানা’খুবই পুষ্টিকর খাদ্য, এটি শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার।

Asma Akter

Leave a Comment