অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করা শরীরের ক্ষতি
চলছে রমজান মাস। এ সময় পানির পিপাসায় অনেকেই অস্থির হয়ে পড়ছেন। তার উপর আবার গরম। ঘরের বাইরে পা দিলেই ঘেমে-নেয়ে একাকার অবস্থা।
আর তাই তো ইফতারে কমবেশি সবাই তৃপ্তি মেটাচ্ছেন ঠান্ডা পানি পান করে। ঠান্ডা পানি পান করা ছাড়া যেন কোনো বিকল্প নেই, তবে ঠান্ডা পানি পান করলে কী সত্য়িই শরীরের ক্ষতি না, নাকি সবটাই ভুল ধারণা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, গরমে ঠান্ডা পানি পান করা যেতেই পারে। তবে অতিরিক্ত পানি পান করা শরীরের জন্য খারাপ হতে পারে। অনেকেই ধারণা করেন, ঠান্ডা পানি পান করলে বোধ হয় চর্বি বাড়ে। তবে এই ধারণারও কোনো ভিত্তি নেই।
তবে গরমে ঠান্ডা পানি পান করার আগে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। না হলে বহু সমস্যা শরীরে চেপে বসতে পারে। বিশেষ করে বাইরে থেকে এসেই ঠান্ডা পানির বোতলে বা মগে চুমুক দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
এ বিষয়ে কলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরী তীব্র দাবদাহে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করলে কয়েকটি সমস্যা দেখা দিতে পারে, সে সম্পর্কে জানিয়েছেন। যেমন-
শরীরের তাপমাত্রা হুট করে কমে যায়
তীব্র গরমে ঠান্ডা পানি পান করলে শরীরের তাপমাত্রা হুট করে কমে যায়। ফলে শরীরে বৈপরিত্য ঘটনা ঘটে। এর থেকে ‘ঠান্ডা-গরম’ লাগতে পারে।
গরমে ঠান্ডা পানি পান করলে ফুসফুসে মিউকাস বা কফ জমার ঝুঁকি তৈরি হয়।
সর্দি লাগার ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়তে পারে।
দাঁতে ব্যথা হতে পারে।
টনসিলের সমস্যা থাকে গলা ব্যথা হতে পারে।
তাই অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি বেশি পরিমাণে পান করবেন না। বিশেষ করে রোদ থেকে ঘরে ফিরে সরাসরি বরফ ঠান্ডা পানি পানের অভ্যাস ত্যাগ করুন। না হলে সমস্যা বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে ঘরের তাপমাত্রার পানির সঙ্গে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি মিশিয়ে পানি পান করুন, তাহলে আর সমস্যা হবে না।
এতে শরীরে পিএইচ ব্যালেন্সও ঠিকঠাক থাকবে। ফলে শরীরে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। খালি পেটে যারা হালকা গরম পানি পান করে, তারা আবার এই অভ্যাস ছেড়ে দেবেন না।
খালি পেটে এক গ্লাস হালকা গরম পানি পান করলে বহুবিধ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। যেমন হজম প্রক্রিয়া ঠিকমতো হবে আবার শরীরের চর্বিও কমবে, এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্যও সারে।
গরমের এ সময় দিনে ৩-৪ লিটার পানি পান করতে হবে সবারই। পাশাপাশি ডাবের পানি, ফলের জুস, শরবত ইত্যাদি পান করতে পারেন। তবে এসব পানীয়ে একদমই মিষ্টি মেশাবেন না। আর বাইরের কোনো পানীয় কিনে খাবেন না।