ইসলাম ধর্মবিশ্ব

“মায়ের সঙ্গে স্ত্রীর কখনো তুলনা করা যাইনা

সুরা মুজাদালা পবিত্র কোরআনের ৫৮তম সুরা। এটি মদিনায় অবতীর্ণ। এর ৩ রুকু, ২২ আয়াত। নিজের স্ত্রীকে স্থায়ী হারাম (যেমন মা) নারীর অঙ্গের সঙ্গে তুলনা করাকে জিহার (ফিকাহশাস্ত্রের একটি নীতি) বলে। এই জিহার প্রথা পরিত্যগ করে বলা হয় যে যাঁরা এটা করবেন তাঁদের এ জন্য কাফফারা দিতে হবে।

ইসলাম–পূর্ব সময়ে জিহারকে তালাকের একটি ধরন বলে গণ্য করা হতো। জিহার করলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক চিরতরে শেষ হয়ে যেত। সাহাবি আউস ইবনে সামেত (রা.)-এর স্ত্রী খাওলা (রা.)-র আর্তিকে কেন্দ্র করে শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাধান দিয়ে সুরা মুজাদালার শুরুর আয়াতগুলো নাজিল হয়।

একবার আউস ইবনে সামেত (রা.) ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীকে বলেছিলেন, ‘তুমি আমার জন্য আমার মায়ের পিঠের মতো।’ অর্থাৎ, স্ত্রীকে তিনি মায়ের মতো হারাম করেছেন। তখন নবী করিম (সা.) বললেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কাছে এখনো কোনো বিধান অবতীর্ণ হয়নি। আমি কী বলব?’ এর কিছুক্ষণ পরই কিছু আয়াত অবতীর্ণ হয়ে প্রাক–ইসলামি জিহার প্রথাকে রদ করে দিল। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বহাল রইল। তবে এ ধরনের অপ্রীতিকর কথার জন্য কঠিন শাস্তির বিধান করা হলো।

সুরা মুজাদালার ১ থেকে ৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়, এমন ঘটনা ঘটলে স্বামী কাফফারা আদায় না করা পর্যন্ত স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল হবে না। জিহারের কাফফারা হলো দুই মাস ধারাবাহিক রোজা রাখা অথবা ৬০ জন অসহায় ব্যক্তিকে খাওয়ানো।

আল্লাহ বলেন, ‘হে রাসুল! তোমার সঙ্গে যে নারী তার স্বামীর বিষয়ে বাদানুবাদ করছে ও আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছে, আল্লাহ তার কথা শুনছেন আর আল্লাহ তোমাদের কথাবার্তা শোনেন। আল্লাহ তো সব শোনেন, সব দেখেন। তোমাদের মধ্যে যারা নিজেদের স্ত্রীদের জিহার করে (মায়ের পৃষ্ঠসদৃশ জ্ঞান করে অর্থাৎ মা বলে গণ্য করে), তারা জেনে রাখুক, তাদের স্ত্রীরা তাদের মা নয়। যারা তাদের জন্মদান করে, কেবল তারাই তাদের মা। ওরা অসংগত ও ভিত্তিহীন কথাই বলে। আল্লাহ তো পাপ মোচন করেন ও ক্ষমা করেন। যারা নিজেদের স্ত্রীদের সঙ্গে জিহার করে ও পরে তাদের উক্তি প্রত্যাহার করে, তাদের প্রায়শ্চিত্ত—যৌনকামনায় একে অপরকে স্পর্শ করার আগে একটি দাসের মুক্তি দেওয়া। তোমাদের এই নির্দেশ দেওয়া হলো। তোমরা যা করো, আল্লাহ তার খবর রাখেন। কিন্তু যার এই সামর্থ্য থাকবে না, তার প্রায়শ্চিত্ত—যৌনকামনায় একে অপরকে স্পর্শ করার আগে একটানা দুই মাস রোজা রাখা, যে তা করতেও অসমর্থ, সে ৬০ জন গরিবকে খাওয়াবে। এ জন্য যে তোমরা যেন আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে বিশ্বাস করো। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তি আর অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে মারাত্মক শাস্তি।’

 

Related posts

কিয়ামতের আগে মুনাফিকের সংখ্যা বেড়ে যাবে

Asma Akter

নামাজের সময়সূচি: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

Asma Akter

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৫ মার্চ ২০২৪

Asma Akter

Leave a Comment