বাংলাদেশে

কাজে লাগান,পরিত্যক্ত ভবনগুলোকে

রাজধানী ছেড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি কর্মকর্তারা থাকতে চান না। চিকিৎসা-সুবিধা, সন্তানদের পড়াশোনা এবং উপযুক্ত বাসস্থানসহ বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা না থাকার কারণে মফস্‌সল শহরগুলোতে যেতে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে অনীহা দেখা যায়। তবে সুযোগ–সুবিধা থাকা সত্ত্বেও ভিন্ন বাস্তবতা রয়েছে।

যেমন গাইবান্ধা শহরে সরকারি বাসভবন থাকা সত্ত্বেও সেখানে কেউ থাকেন না। ২৮ বছর ধরে ভবনগুলো পরিত্যক্ত হয়ে আছে। এ নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হচ্ছে, কারও কিছু যায় আসে না। দুঃখজনক হচ্ছে, এটিই যেন এখানে চিরায়ত রীতি হয়ে উঠেছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গাইবান্ধা শহরের প্রাণকেন্দ্রে বাংলাবাজার এলাকায় মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে সরকারি কোয়ার্টারের অবস্থান। এখানে রয়েছে চারটি ভবন, যার তিনটি দোতলা ও একটি তিনতলা। আছে খেলার মাঠ।

কোয়ার্টারের পূর্ব প্রান্তে সদর উপজেলা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয়, উত্তরে গণপূর্ত কার্যালয়, দক্ষিণে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় এবং পশ্চিমে গাইবান্ধা আদর্শ কলেজ। এসব প্রতিষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে আবাসিক এলাকা। এমন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এখানে কোনো সরকারি কর্মকর্তা
থাকেন না।

যেখানে সরকারি বাসভবন পেতে অনেক জায়গায় কর্মকর্তাদের অধীর অপেক্ষা করতে হয়, এমনকি ঘুষ লেনদেনও করতে হয়; সেখানে গাইবান্ধার এসব ভবনে কেউ থাকতে চান না। জানা যাচ্ছে, সরকারি কোয়ার্টারে থাকলে মূল বেতনের ৪০ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়া হয়। এ হিসাবে একজন কর্মকর্তার মূল বেতন ৪০ হাজার হলে বাসাভাড়া দিতে হয় ১৬ হাজার টাকা। অন্যদিকে গাইবান্ধা শহরে চার থেকে ছয় হাজার টাকায় উন্নত মানের বাসা ভাড়া পাওয়া যায়।

২৮ বছর ধরে পড়ে থাকতে থাকতে সেগুলো এখন মাদকের আখড়া হয়ে গেছে। রাতে ভবনগুলোর ভেতরে মাদকের বেচাকেনা ও সেবন, জুয়ার আসর এবং অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে।

এর ফলে স্থানীয় সামাজিক পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। উঠতি বয়সের তরুণ-যুবকেরা বিপথগামী হচ্ছেন। ছিনতাইয়ের ঘটনাও বেড়েছে। অপরাধীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় কোয়ার্টার এখন এলাকাবাসীর কাছে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কোয়ার্টারে কেউ না থাকায় সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে; অথচ দায়িত্বপ্রাপ্তরা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। রাজধানীতে যে হারে বাসাভাড়া কাটা হবে, তা গাইবান্ধার মতো প্রত্যন্ত জেলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, তা কোনোভাবে যুক্তিসংগত নয়। ফলে এখানে নীতিগত সমস্যাও যুক্ত।

আমরা মনে করি, এ ভবনগুলোতে কোনো কর্মকর্তা থাকতে না চাইলে সেগুলোকে সংস্কার করে ছাত্রাবাস, কর্মজীবী নারী হোস্টেল বা অন্য কোনো সরকারি কাজে ব্যবহার করা হোক।

 

Related posts

দাম কমেছে ডিমের ৫ টাকা

Megh Bristy

সাড়া ফেলেছে মেহেদীর ‘হেলিকপ্টার রেস্তোরাঁ’, ঘুরবে সব জেলা

Suborna Islam

সহকর্মীকে গোপনে বিয়ে, প্রথম স্ত্রীর মামলায় প্রভাষক কারাগারে

Samar Khan

Leave a Comment