এক গ্রামের দুটি বাঁশের ঝাড়। দুটি ঝাড় আলাদা দুই পরিবারের। তবে ঝাড় দুটিতে থাকে শত শত পাখি। এলাকায় বাঁশঝাড়ওয়ালা বাড়ি দুটির পরিচিতি হয়ে গেছে ‘পাখিবাড়ি’ হিসেবে।
বাড়ি দুটির অবস্থান সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের লীলাপাড়া গ্রামে। একটি বাড়ি সৌদি আরব প্রবাসী সামসিদ আলীর (৬০), অপরটি কামাল উদ্দিনের (৫৮)। সমসিদ আলীর ছোট বোনের স্বামী কামাল উদ্দিন। সামসিদ আলী প্রায় ৩৫ বছর সৌদি আরবে থাকেন। আর কামাল উদ্দিন প্রায় ২৭ বছর প্রবাসজীবন কাটিয়ে তিন মাস আগে বাড়ি ফিরেছেন। এখন বাড়ির বাঁশের ঝাড়ে আশ্রয় নেওয়া পাখিগুলোর দেখভাল করে অবসর সময় পার করছেন।
সম্প্রতি লীলাপাড়া গ্রামের দুটি বাড়ি ঘুরে দেখা গেছে, বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বক, পানকৌড়ি ও শালিক পাখি। প্রথমে সামসিদ আলীর বাড়িতে গেলে দেখা হয় তাঁর ছোট ছেলে আবদুল মুকিতের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ সময়ে পাখির উপস্থিতি কিছুটা কম। ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই মাসে পাখির উপস্থিতি বেশি থাকে। এপ্রিল মাসের দিকে বাঁশঝাড়ে বক ডিম পাড়ে। সে সময়ে পাখিশিকারিদের আনাগোনাও বেড়ে যায়। আবার ঝড়-তুফানে অনেক পাখির বাসা ভেঙে নিচে পড়ে। এ কারণে পাখির ডিম ও ছোট বাচ্চা মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে পাখির বাচ্চা পড়লে আবার সেগুলো গাছে ফিরিয়ে দেন তাঁরা। এপ্রিল মাসের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে বালি হাঁস ও শামুকখোল পাখি আসে। শীতের সময়ে আবার চলে যায়।
আবদুল মুকিত বলেন, ১২ বছরের বেশি সময় ধরে তাঁদের বাড়ির বাঁশঝাড়ে পাখির আশ্রয়। তাঁদের বাড়ির সবাই পাখিগুলোর দেখাশোনা করেন। তাঁর বাবা দুই থেকে তিন বছর পরপর যখন দেশে আসেন, তখন পাখিগুলোর দেখাশোনা করেই সময় কাটান। মুকিতরা চার ভাই, এক বোন। তাঁরা পাখিগুলোর খেয়াল রাখেন।