ইসলাম ধর্ম

মানুষ সম্পদশালী হওয়া বা না হওয়াকে সম্মান-অসম্মানের মানদণ্ড ভাবে, যা ঠিক নয়।

Pickynews24

সুরা ফাজর কোরআনের ৮৯তম সূরা। ফাজর শব্দের অর্থ ভোর। মক্কায় অবতীর্ণ এ সুরাটির আয়াত ৩০টি। সুরা ফাজরের শুরুতে আল্লাহ প্রাচীনকালের কয়েকটি অবিশ্বাসী জাতির ধ্বংস হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। সুরার ১৫-২০ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, মানুষ সম্পদশালী হওয়া বা না হওয়াকে সম্মান-অসম্মানের মানদণ্ড ভাবে, যা ঠিক নয়। এরপর আল্লাহ এতিমদের প্রতি দয়া করা ও দরিদ্রদের দান করার নির্দেশ দিয়েছেন। মিরাসের সম্পদ সঠিকভাবে বণ্টন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

সুরা ফাজরের ১৫-২০ আয়াতে আল্লাহ বলেন,
(১৫)
فَاَمَّا الۡاِنۡسَانُ اِذَا مَا ابۡتَلٰىہُ رَبُّہٗ فَاَکۡرَمَہٗ وَنَعَّمَہٗ فَیَقُوۡلُ رَبِّیۡۤ اَکۡرَمَنِ
ফাআম্মাল ইনসানু ইযা মা-বতালাহু রাব্বুহু ফাআকরামাহূ ওয়া না‘আমাহূ ফাইয়াকূলু রাববী আকরামান।
মানুষ তো এ রকম যে, তার রব যখন তাকে পরীক্ষা করেন সম্মান ও অনুগ্রহ দান করে, তখন সে বলে, আমার রব আমাকে সম্মানিত করেছেন।

(১৬)
وَاَمَّاۤ اِذَا مَا ابۡتَلٰىہُ فَقَدَرَ عَلَیۡہِ رِزۡقَہٗ فَیَقُوۡلُ رَبِّیۡۤ اَہَانَنِ
ওয়া আম্মা ইযা মা-বতালা-হু ফাকাদারা আলাইহি রিঝকাহূ ফায়াকূলু রাববী আহানান।
যখন তাকে পরীক্ষা করেন তার রিজিক সংকুচিত করে, তখন সে বলে, আমার রব আমাকে হীন করেছেন।

(১৭)
کَلَّا بَلۡ لَّا تُکۡرِمُوۡنَ الۡیَتِیۡمَ
কাল্লা বাল্লা তুকরিমূনাল ইয়াতীম।
এটা অমূলক, বরং তোমরা এতিমকে সম্মান করো না।

(১৮)
وَلَا تَحٰٓضُّوۡنَ عَلٰی طَعَامِ الۡمِسۡکِیۡنِ
ওয়া লা তাহাদ্দূনা আলা তাআমিল মিসকীন।
তোমরা অভাবগ্রস্তদের খাদ্যদানে পরস্পরকে উৎসাহিত করো না,

(১৯)
وَتَاۡکُلُوۡنَ التُّرَاثَ اَکۡلًا لَّمًّا
ওয়া তাকুলূনাত-তুরাসা আকলাল-লাম্মা।
তোমরা উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য সম্পদ পুরোপুরি খেয়ে ফেল,

(২০)
وَّتُحِبُّوۡنَ الۡمَالَ حُبًّا جَمًّا
ওয়া তুহিব্বুনাল মালা হুব্বান জাম্মা।
এবং তোমরা ধন-সম্পদকে প্রাণভরে ভালবাস।

এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই

১. পার্থিব ধন-সম্পদ ও ঐশ্বর্য আল্লাহর কাছে মানুষের সম্মান ও অসম্মানের মানদণ্ড নয়। আল্লাহ তার অপছন্দের অনেক বান্দাকে প্রচুর ধন-সম্পদ দান করেন, অনেক প্রিয় বান্দাকে অভাবে রাখেন।

২. পিতৃহারা অসহায় শিশুদের খোঁজখবর রাখা, তাদের প্রতি অনুগ্রহ করা মুসলমানদের ওপর ওয়াজিব।

৩. সমাজের অভুক্ত, অভাবগ্রস্ত ও দরিদ্র মানুষদের খোঁজখবর রাখা, সাধ্য অনুযায়ী তাদেরকে দান করা, খাবার খাওয়ানো এবং এ ব্যাপারে পরস্পরকে উৎসাহ দেওয়া সম্পদশালী মুসলমানদের কর্তব্য।

৪. কেউ মারা গেলে তার সম্পদ আল্লাহর বিধান অনুযায়ী তার ছোট, বড়, পুরুষ ও নারী উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া ওয়াজিব।

৫. দুনিয়ার সম্পদের প্রতি অতিরিক্ত লোভ মানুষকে জুলুম ও পাপাচারের পথে নিয়ে যায়। তাই লোভ থেকে অন্তরকে মুক্ত রাখা উচিত।

Related posts

যদি কেউ কোরআন খতমের মানত করে তা অন্যদের দিয়ে পড়ালে পূরণ হবে কি?

Asma Akter

জাকাত ওয়াজিব হয় বর্ধনশীল সম্পদের ওপর যা ৪ ধরনের

Asma Akter

গালিগালাজ, অশালীন ও অশ্লীল কথাবার্তা ইসলামি শরিয়তে নিষিদ্ধ

Asma Akter

Leave a Comment