ইসলাম ধর্ম

যে কারণে ইহুদিদের নাম ‘ইহুদি’ হলো

Pickynews24

আল্লাহর নবি মুসার (আ.) অনুসারীরা- যারা মুসার (আ.) পর প্রেরিত আল্লাহর দুজন নবি ইসা (আ.) ও মুহাম্মাদকে (সা.) নবি হিসেবে স্বীকার করে না, তারা ‘ইহুদি’ নামে পরিচিত। কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহর নবি মুসার (সা.) অনুসারীদের ইহুদি বলা হয়েছে। যেমন সুরা বাকারায় ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের পারস্পরিক দ্বন্দ্বের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেছেন,

وَ قَالَتِ الۡیَهُوۡدُ لَیۡسَتِ النَّصٰرٰی عَلٰی شَیۡءٍ ۪ وَّ قَالَتِ النَّصٰرٰی لَیۡسَتِ الۡیَهُوۡدُ عَلٰی شَیۡءٍ وَّ هُمۡ یَتۡلُوۡنَ الۡکِتٰبَ کَذٰلِکَ قَالَ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ مِثۡلَ قَوۡلِهِمۡ فَاللّٰهُ یَحۡکُمُ بَیۡنَهُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ فِیۡمَا کَانُوۡا فِیۡهِ یَخۡتَلِفُوۡنَ

আর ইহুদিরা বলে, নাসারাদের কোন ভিত্তি নেই আর নাসারারা বলে ইহুদিদের কোন ভিত্তি নেই। অথচ তারা কিতাব পাঠ করে। এভাবেই, যারা কিছু জানে না, তারা তাদের কথার মতো কথা বলে। যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন সে বিষয়ে তাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন। (সুরা বাকারা: ১১৩)

ইহুদিদের নাম ইহুদি কেন হলো এ ব্যাপারে আলি (রা.) ও আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের (রা.) বক্তব্য পাওয়া যায়। তাবরানি ও ইবনে আবি হাতেম এ দুজন সাহাবি থেকে বর্ণনা করেছেন, ইহুদিদের নাম ইহুদি হওয়ার কারণ হলো তুর পাহাড়ে নবি মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়ায় বলেছিলেন, ‘ইন্না হুদনা ইলাইক’ অর্থাৎ আমরা তোমার কাছে প্রত্যাবর্তন করলাম বা তওবা করলাম।

কোরআনে একটি ঘটনার বিবরণে মুসার (আ.) এ বক্তব্য উল্লিখিত হয়েছে। ঘটনাটি হলো, একবার মুসা (আ.) বনি ইসরাইলের সত্তর জনের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে তুর পাহাড়ে যান। সেখানে ওই দলটি আল্লাহকে সরাসরি দেখার দাবি করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি নেমে আসে এবং তারা সবাই মারা যায়। কোরআনে ঘটনাটির বর্ণনা এসেছে এভাবে,

وَ اخۡتَارَ مُوۡسٰی قَوۡمَهٗ سَبۡعِیۡنَ رَجُلًا لِّمِیۡقَاتِنَا فَلَمَّاۤ اَخَذَتۡهُمُ الرَّجۡفَۃُ قَالَ رَبِّ لَوۡ شِئۡتَ اَهۡلَکۡتَهُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ وَ اِیَّایَ اَتُهۡلِکُنَا بِمَا فَعَلَ السُّفَهَآءُ مِنَّا اِنۡ هِیَ اِلَّا فِتۡنَتُکَ تُضِلُّ بِهَا مَنۡ تَشَآءُ وَ تَهۡدِیۡ مَنۡ تَشَآءُ اَنۡتَ وَلِیُّنَا فَاغۡفِرۡ لَنَا وَ ارۡحَمۡنَا وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الۡغٰفِرِیۡنَ وَاکۡتُبۡ لَنَا فِیۡ هٰذِهِ الدُّنۡیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ اِنَّا هُدۡنَاۤ اِلَیۡکَ قَالَ عَذَابِیۡۤ اُصِیۡبُ بِهٖ مَنۡ اَشَآءُ وَ رَحۡمَتِیۡ وَسِعَتۡ کُلَّ شَیۡءٍ فَسَاَکۡتُبُهَا لِلَّذِیۡنَ یَتَّقُوۡنَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ الَّذِیۡنَ هُمۡ بِاٰیٰتِنَا یُؤۡمِنُوۡنَ

আর মুসা নিজের জাতি থেকে সত্তর জন লোককে আমার নির্ধারিত স্থানের জন্য নির্বাচন করল। তারপর যখন ভূমিকম্প তাদেরকে পাকড়াও করলো তখন সে বললো, ‘হে আমার রব, আপনি চাইলে আগেও এদের ধ্বংস করতে পারতেন এবং আমাকেও। আমাদের মধ্যে নির্বোধরা যা করেছে তার কারণে কি আমাদেরকে ধ্বংস করবেন? এটাতো আপনার পরীক্ষা ছাড়া কিছু না। এর মাধ্যমে যাকে চান আপনি পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান হিদায়াত দান করেন। আপনি আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন এবং আপনি উত্তম ক্ষমাশীল। আর আমাদের জন্য এ দুনিয়াতে ও আখিরাতে কল্যাণ লিখে দিন। নিশ্চয়ই আমরা আপনার দিকে প্রত্যাবর্তন করেছি।’ তিনি বললেন, আমি যাকে চাই তাকে আমার আযাব দেই। আর আমার রহমত সব বস্তুকে পরিব্যাপ্ত করেছে। সুতরাং আমি তা লিখে দেব তাদের জন্য যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং জাকাত প্রদান করে আর যারা আমার আয়াতসমূহের ওপর ইমান আনে। (সুরা আরাফ: ১৫৫, ১৫৬)

 

Related posts

আজকের নামাজের সময়সূচি: ৪ এপ্রিল ২০২৪

Asma Akter

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২০ মে ২০২৪

Asma Akter

নবিজি (সা.) মাঝে মাঝে রসিকতা করতেন

Asma Akter

Leave a Comment