ইসলাম ধর্ম

হালাল হবে কি তিমি মাছ খাওয়া?

Pickynews24

হানাফি মাযহাবের বাইরে অন্যান্য আলেমদের মতে ক্ষতিকর বা হারাম ঘোষিত প্রাণী ছাড়া সব প্রকার সামুদ্রিক প্রাণী খাওয়া হালাল। তাদের মতে কাঁকড়া, কচ্ছপ, অক্টোপাস, শামকু, ঝিকুন ইত্যাদি সবই হালাল প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত। আম্বর মাছ যা স্পার্ম হোয়েল বা শুক্রাণু তিমি নামে পরিচিত, তাও তাদের মতে হালাল প্রাণী।

তবে এ ক্ষেত্রে হানাফি ওলামায়ে কেরামের দ্বিমত রয়েছে। তাদের মতে জলজ প্রাণীসমূহের মধ্যে শুধু মাছ খাওয়া জায়েজ, অন্যান্য জলজ প্রাণী খাওয়া বৈধ নয়। হানাফিদের দলিল হলো, আল্লাহ কোরআনে বলেছেন,

ويحرم عليهم الخبائث
তাদের জন্য খাবায়েস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। (সুরা আরাফ: ১৫৭)

হানাফি আলেমরা সমুদ্রের মাছ ছাড়া অন্যান্য প্রাণীগুলো খাবায়েসের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করে হারাম বলেন। আম্বর বা শুক্রাণু তিমি খাওয়া বৈধ হবে কি না এ নিয়ে হানাফি ওলামায়ে কেরামের মধ্যে দুটি মত রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, এটি মাছ হিসেবে প্রসিদ্ধ হলেও মূলত মাছ নয় বরং স্তন্যপায়ী প্রাণী। তাই এটি মাছ নয় এমন জলজ প্রাণীসমূহের অন্তর্ভুক্ত এবং খাওয়া হারাম হবে।

তবে অনেক হানাফি আলেমের মতে সামুদ্রিক অন্যান্য মাছের মতো আম্বর মাছ খাওয়াও বৈধ। তারা হাদিসে বর্ণিত একটি ঘটনা দলিল হিসেবে উল্লেখ করেন, যে ঘটনায় সাহাবিদের একটি দল আম্বর মাছ খেয়েছিলেন এবং রাসুল (সা.) তা অনুমোদন করেছিলেন। ঘটনাটি হলো, রাসুল সা. একবার আবু উবায়দার (রা.) নেতৃত্বে তিনশত সাহাবির একটি দলকে যুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। তাদেরকে এমন এক অঞ্চলে অবস্থান করতে হচ্ছিল যেখানে খাবার-পানীয় নেই। তাদের সাথে নিয়ে যাওয়া খাবার-পানীয়ও শেষ হয়ে যায়। দলনেতা আবু ওবায়দা রা. তখন যার কাছে যা খাবার আছে সব একত্র করার নির্দেশ দেন। কিন্তু সব জমা করার পরও মাত্র দুই ব্যাগ খেজুর হয়। আবু উবায়দা (রা.) ওই খেজুরগুলোই প্রতিদিন একটি একটি করে ভাগ করে দিতেন। এক সময় তাও শেষ হয়ে গেলো এবং ক্ষুধার যন্ত্রণায় সাহাবিরা গাছের পাতা খাওয়া শুরু করলেন।

এই অবস্থায় একদিন তারা দেখেলেন সমুদ্রের তীরে বড় কোনো প্রাণী পড়ে আছে। প্রাণীটি এত বড় যে দূর থেকে দেখে পাহাড় বলে ভ্রম হয়। কাছে গিয়ে দেখা গেলো সেটি একটি আম্বর মাছ। ওই মাছটি সাহাবিরা আঠারো দিন ধরে খান। মদিনায় ফিরে যাওয়ার পরও তাদের কাছে মাছটির কিছু অংশ রয়ে গিয়েছিল।

মদিনায় পৌঁছে তারা যখন আল্লাহর রাসুলকে (সা.) এই ঘটনা শোনালেন, তিনি বললেন, আল্লাহ তোমাদের জন্য রিজিক হিসেবে এটি দান করেছিলেন। তোমরা খাও, আমাকেও খাওয়াও।

 

Related posts

ইচ্ছা করে রোজা ভেঙে ফেললে কাফফারা দিতে হয়

Asma Akter

কৃপণতা মু’মিনের স্বভাব হতে পারে না

Asma Akter

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৮ মার্চ ২০২৪

Asma Akter

Leave a Comment