ইসলাম ধর্ম

কাজের পরিশুদ্ধি অন্তরের পরিশুদ্ধির ওপর নির্ভর করে।

Pickynews24

নোমান ইবনে বশির (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, শরীরের মধ্যে একটি মাংসের টুকরো আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই খারাপ হয়ে যায়। সে মাংসের টুকরোটি হলো অন্তর। (সহিহ বুখারি, সহিহ ‍মুসলিম)

এ হাদিস থেকে যে শিক্ষাগুলো আমরা পাই

১. কাজের পরিশুদ্ধি অন্তরের পরিশুদ্ধির ওপর নির্ভর করে। হাফেজ ইবনে রজব (রহ.) বলেন, মানুষের অন্তর যখন ঠিক হয়ে যায়, তখন তার কাজও ঠিক হয়ে যায়। তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তখন শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই নড়াচড়া করে। তিনি আরও বলেন, অন্তর পরিশুদ্ধ হলে কাজকর্ম পরিশুদ্ধ হয়ে যাওয়া অপরিহার্য। অল্প জ্ঞানের কিছু মানুষ ধারণা করে এ হাদিসে অন্তরের পরিশুদ্ধি ও কাজের পরিশুদ্ধির মধ্যে পার্থক্য করা হয়েছে। এটা অজ্ঞতাপ্রসূত বা কুপ্রবৃত্তির অনুগামী ভুল ধারণা। ইমান অন্তরের বিশ্বাস, মুখের স্বীকারোক্তি ও আমলের সমষ্টি। অন্তরের পরিশুদ্ধির প্রভাব মানুষের বাহ্যিক আচরণ ও কাজের ওপর পড়ে। কারো ভেতর যতো বেশি পরিশুদ্ধ হয়, তার কাজ ততো বেশি উত্তম ও উন্নত হতে থাকে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিস থেকেও এটা বোঝা যায়। ওই হাদিসে রাসুল (সা.) অন্তর ও আমলকে একসাথে উল্লেখ করেছেন। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তোমাদের রূপ বা সম্পদ দেখেন না, তিনি দেখেন তোমাদের অন্তর ও আমল। (সহিহ মুসলিম)

২. মুসলমানদের কর্তব্য অন্তরের পরিশুদ্ধিকে গুরুত্ব দেওয়া। যেসব কাজ অন্তরের পবিত্রতা নষ্ট করে তা থেকে দূরে থাকা। অন্তর শুদ্ধ হয়ে গেলে শরীরের সব অঙ্গ তার অনুসরণ করে। শিক্ষক ও দাঈদের উচিত মানুষের অন্তর পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করা। অন্তর শুদ্ধ হলে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই আল্লাহর শরিয়তের আহ্বানে সাড়া দেয় এবং আখেরাতের জীবনের ব্যাপারে আগ্রহী হয়।

৩. আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করা, বেশি বেশি দোয়া করা অন্তরের পরিশুদ্ধির জন্য সহায়ক। আল্লাহ তাআলা কোরআনে আমাদের দোয়া করতে শিখিয়েছেন,

رَبَّنَا لَا تُزِغۡ قُلُوۡبَنَا بَعۡدَ اِذۡ هَدَیۡتَنَا وَ هَبۡ لَنَا مِنۡ لَّدُنۡکَ رَحۡمَۃً اِنَّکَ اَنۡتَ الۡوَهَّابُ

হে আমাদের রব, আপনি হিদায়াত দেয়ার পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদের রহমত দান করুন। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা। (সুরা আলে ইমরান: ৮)

রাসুল (সা.) দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ مُصَرِّفَ الْقُلُوبِ صَرِّفْ قُلُوبَنَا عَلَى طَاعَتِكَ

অন্তরসমূহের পরিচালক হে আল্লাহ! আপনি আমাদের অন্তরসমূহ আপনার আনুগত্যের ওপর অটল রাখুন। (সহিহ মুসলিম)

Related posts

নবিজির (সা.) শাফাআত করবেন, আজানের পর যে দোয়াটি পড়লে

Asma Akter

নামাজের সময়সূচি: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

Asma Akter

যে কোনো বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ ও আল্লাহর সহায্য প্রার্থনা মুমিনের কর্তব্য

Asma Akter

Leave a Comment