বিজ্ঞানসর্বশেষ

বিজ্ঞানীরা খোঁজ পেলেন সাড়ে ১৫ কোটি বছর আগে হারানো মহাদেশের

Pickynews24

সাত বছরের গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থলভাগে ওই জায়গাটির সন্ধান পেয়েছেন।অস্ট্রেলিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া একটি ভূ-ভাগ সাড়ে ১৫ কোটি বছর আগে বেমালুম অদৃশ্য হয়ে যায় বলে ধারণা করা হয়েছিল।ইন্দোনেশিয়াজুড়ে অদৃশ্য একটি বাধা বন্যপ্রাণীরা কেন অতিক্রম করতে পারে না এটিও ব্যাখ্যা করতে এই আবিষ্কার সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এসব তথ্য জানা যায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে।

বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণা বলছে, আর্গোল্যান্ড নামের ওই মহাদেশটিকে পুনরায় একে আবিষ্কার করা গেছে। মহাদেশীয় বিভাজন সাধারণত প্রাচীন জীবাশ্ম, শিলা এবং পর্বতশ্রেণীতে চিহ্ন রেখে যায়। কিন্তু আর্গোল্যান্ডের কোনো হদিস বিজ্ঞানীরা পাচ্ছিলেন না।

এখন নেদারল্যান্ডসের উতরেখত বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা মনে করেন যে তারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পূর্বের দ্বীপগুলোতে লুকানো রহস্যময় ভূ-ভাগটির সন্ধান পেয়েছেন।

এই আবিষ্কার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বন্যপ্রাণীদের আলাদা করে রাখা কাল্পনিক সীমানা ওয়ালেস লাইনের ব্যাখ্যা পেতে সাহায্য করতে পারে।

‘আমরা আক্ষরিক অর্থেই তথ্যের “দ্বীপ” নিয়ে কাজ করছিলাম, যে কারণে গবেষণায় এত সময় লেগেছে। আমরা সাত বছর ধরে ধাঁধার টুকরোগুলোকে জোড়া লাগিয়েছি।’ গবেষণাটির লেখক ও উতরেখত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ এল্ডার্ট অ্যাডভোকাট এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন।

অ্যাডভোকাট লাইভ সায়েন্সকে বলেন, অস্ট্রেলিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে আর্গোল্যান্ড কোথায় গিয়েছিল তা খুঁজে বের করতে সতর্কভাবে কিছু কাজ করতে হয়। বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চারপাশে কিছু ফিতার মতো বা রিবন মহাদেশ খুঁজে পান। কিন্তু সেগুলোকে একত্রিত করতে পারছিলেন না।

‘কিছুই মিলছিল না, ’ বলেন তিনি।

অবশেষে, একটি ধারণা এল তাঁদের মাথায়, আর্গোল্যান্ড যদি একটি ভূ-ভাগের পরিবর্তে কিছু টুকরো টুকরো মহাদেশ মিলিয়ে একটি কিছু হয়?

‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার মতো জায়গা গুলির থেকে একেবারেই আলাদা। যেখানে একটি মহাদেশ সুন্দরভাবে দুই টুকরো হয়ে গেছে।’ অ্যাডভোকাট প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন।

আর্গোল্যান্ড অনেকগুলি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এটি মহাদেশটি সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে বাধাগ্রস্ত করেছিল।’ বলেন তিনি।

এই অনুমান থেকে কাজ করে, তারা দেখতে পান যে আর্গোল্যান্ড সত্যিই অদৃশ্য হয়ে যায়নি। এটি ইন্দোনেশিয়ার পূর্বে দ্বীপগুলির মধ্যে খুব প্রসারিত এবং খণ্ডিত অংশ হিসেবে টিকে ছিল।

এই কাজের মাধ্যমে, তারা অবশেষে আর্গোল্যান্ডকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।

কারণ এটি একটি একক ভূ-ভাগ নয় বরং সমুদ্র দিয়ে বিভক্ত ক্ষুদ্র মহাদেশের একটি যোগফল। অ্যাডভোকাট এবং তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মী ভূতত্ত্ববিদ ডুয়ে ভ্যান হিন্সবেয়ারগ্যান আর্গোল্যান্ডকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করার জন্য একটি নতুন শব্দ তৈরি করেছেন, সেটি হলো ‘আর্গোপেলাগো’।

তাদের ফলাফল ১৯ অক্টোবর গন্ডোয়ানা রিসার্চ নামের জার্নাল প্রকাশিত হয়।

অ্যাডভোকাট লাইভ সায়েন্সকে জানান, ওয়ালেস লাইন নামের ইন্দোনেশিয়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি কাল্পনিক রেখাকে ব্যাখ্যা করতেও এটি বিজ্ঞানীদের সাহায্য করতে পারে। এই রেখা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্তন্যপায়ী প্রাণী ও পাখিদের আলাদা করে রেখেছে।

রেখা বা ব্যারিয়ারটি বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্ত করেছে কারণ এটি দ্বীপের বন্যপ্রাণীকে খুব স্পষ্টভাবে আলাদা করে। রেখার পশ্চিমে বাঘ এবং হাতির মতো স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে, যেগুলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেও পাওয়া যায়। তবে এগুলো পূর্বে প্রায় সম্পূর্ণ অনুপস্থিত, যেখানে আপনি মার্সুপিয়াল (সাধারণত থলেতে বাচ্চা বহন করে এ ধরনের প্রাণীরা) এবং কাকাতুয়া খুঁজে পেতে পারেন, যা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।

এটি সম্ভবত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভেঙে পড়ার আগে আর্গোল্যান্ড ভবিষ্যতের অস্ট্রেলিয়া থেকে তার নিজস্ব বন্যপ্রাণী নিয়ে যাওয়ার কারণে হতে পারে।

‘এই পুনর্গঠনগুলি জীববৈচিত্র্য এবং জলবায়ুর বিবর্তনের মতো বিষয়গুলি আমাদের বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ বলেন ডুয়ে ভ্যান হিন্সবেয়ারগ্যান।

Related posts

ঢাকা দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে

Samar Khan

১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নামলে বন্ধ থাকবে স্কুল

Samar Khan

নামাজের সময়সূচি: ১৫ মার্চ ২০২৪

Asma Akter

Leave a Comment